Sharing is caring!
বিশেষ প্রতিবেদন: গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ও রাতে অবাধে ভারত থেকে আসছে নানা রকম অবৈধ অস্ত্র-মাদক সহ ভারতীয় গরু মহিষ, চা-পাতা, চিনি, পান মসলা, কসমেটিকস, সার্জিক্যাল সামগ্রী। ভারতীয় এসব পণ্যের চালানের বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছে মূল্যবান খাদ্যপণ্য সামগ্রী ও বৈদেশিক মূদ্রা। তবে বৈধ পথে নয়। অবৈধ পথে আসা এসব চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছেন খোদে থানার ওসির নিয়োগকৃত লাইনম্যান ও বিভিন্ন ক্যাম্পের বিজিবির সুবেদারদের নিয়োগকৃত ল্যাইনম্যানেরা। প্রতিমাসে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে লিজ দেওয়া হয় সীমান্ত এলাকা। এটাকে পুলিশের ভাষায় সীমান্ত ঘাট বলে। আর বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতি সাপ্তাহে জন্য ঘাট লিজ দেওয়া হয় এসব লাইনম্যানদের।
সম্প্রতি সময়ে থানার ওসি থেকে ১৫ লক্ষ টাকায় থানারঘাট লিজ নিয়েছেন একজন । তিনি ঝামেলা না পোহাতে সেই সীমান্তঘাট সাবলিজ দিয়েছেন লাইনম্যান খোকন আহমদ-মেহদী-নাজিম-জয়দুল-নাজমুল-কামাল মেম্বার-কল্পনার কাছে। পুলিশের নির্ধারিত মাসিক চাঁদা দিয়ে নিজের জন্য নাকি মাত্র ২০ হাজার টাকা রাখেন আব্দুল্লাহ। সীমান্তঘাটের লাইনম্যান নামের বখরাবাজ সিন্ডিকেটে রয়েছেন গোয়াইঘাট থানা পুলিশের বেশ কয়েকজন এসআইসহ ১০/১২ জনের লাইনম্যান সিন্ডিকেট। ল্যাইনম্যানদের কাছ থেকে থানার ওসি কেএম নজরুল-এর নামে বখরা আদায় করে থাকেন এসব এসআইগণ। সম্প্রতি র্যাব-৯ সিলেট শহরে অভিযান চালিয়ে চোরাচালানে আসা দুটি চিনির ট্রাক আটক করে। ট্রাক দুটি মালিকের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে ছিলেন মিস্ত্ররী আব্দুল্লাহ নামের একজন। র্যাব অনুসন্ধানে জানতে পারে ট্রাক দুটি ভারত থেকে চোরাই পথে আসা চিনি নিয়ে শহরের কালীঘাটে প্রবেশ করছে। পরে অভিযান চালিয়ে চিনি ভর্তি ট্রাক দুটি আটক করে। বর্তমানে আটককৃত ট্রাকগুলো শাহপরাণ থানায় জব্দ রয়েছে। এর আগে গভির রাতে বন্দরবাজার থেকে চোরাই পথে আসা দুটি চিনির ট্রাক ছিনতাইর ঘটনা ঘটে। যদি সেই ট্রাকগুলো পরে হুমায়ূন রশীদ চত্তরে আটক হয়। কিন্তু সেই আটককৃত টাকের আর হদিস বা তথ্য পাওয়া যায়নি। গোয়াইনঘাট থানার জাফলং সীমান্ত দেখবাল করেন থানা পুলিশের এসআই ইমরুল কবির ও এসআই সাদ্দাম হোসেন, তারাই লাইনম্যানদের সমন্বয় করে থাকেন। প্রতাপুর, সোনারহাট এলাকায় থানার ওসির হয়ে প্রতিমাসে ও সাপ্তাহিক ভাবে ল্যাইনম্যানদের কাছ থেকে চাঁদার টাকা আদায় করেন থানার এসআই জহির ও এসআই মিহির। এখানে লাইনম্যানদের গডফাদার বিজিবির নিয়োগকৃত ল্যাইনম্যান দুলাল। প্রতাপপুর সীমান্তে থাকা মোস্তফা ও হেলাল। বিছনাকান্দি সীমান্তে থাকা শেরগুল ও নুরু। সোনারহাট সীমান্তে বিএনপির মেম্বার কামাল ও শাকিল। শাকিল আর কামাল মেম্বার প্রতিদিন চোরাই পথে আসা গরু প্রতি ১ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিলেও থানার ওসির তহবিলে গরু প্রতি ১ হাজার টাকা করে দিয়ে থাকেন এবং তিনি সকল লাইনম্যানদের সমন্বয় করে থাকেন বলে অভিযোগে প্রকাশ। অভিযোগে রয়েছে, ওসি কে.এম নজরুল থানার এসআই মিহিরকে বিছনাকান্দি সীমান্তে বখরা আদায়ের জন্য নিয়োজিত করে রেখেছেন। এই সীমান্ত দিয়ে গরুপ্রতি প্রথমে বখরা আদায় করেন শেরগুল ও নুরু। পরে তারা থানা পুলিশের টাকার ভাগ এসআই মিহিরে কাছে বুঝিয়ে দেন। সোনারহার্ট-প্রতাপপুর সীমান্তে গরুর টাকা আদায় করেন বিএনপির কামাল মেম্বার ও হেলাল মেম্বার। এই দুইজনই থানার এসআই জহিরকে পুলিশের টাকার হিসাব বুঝিয়ে দেন। (চলমান)
৬৫২ পড়েছেন