• ৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১২ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

সিসিক নির্বাচনে বাকযুদ্ধ শুরু

admin
প্রকাশিত মে ৩১, ২০২৩
সিসিক নির্বাচনে বাকযুদ্ধ শুরু

Sharing is caring!

আব্দুল হালিম সাগর বিশেষ প্রতিনিধি সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিক বরাদ্দ বা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়নি এখনো। তবে সকল মেয়র প্রার্থীই নিজ নিজ প্রচারণায় একে অপরের বিরুদ্ধে করছেন অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। এ যেনো ভোটের আগেই আরেক বাকযুদ্ধ। এটা নাকি ভোটারদের নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে প্রচারণার একটি কৌশল মাত্র। তবে প্রতিক বরাদ্দের আগেই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে সরগরম হয়ে উঠেছে সিলেট সিটির ভোটের মাঠ। শুধু মেয়র প্রাথী নয়, কাউন্সিলার-কাউন্সিলর সকলে এমন অভিযোগ করছেন একে অপরের বিরুদ্ধে। যদিও সিসিক নির্বাচনে এবার বিএনপি দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচনে অংশ নেয় নি। তবে বিচ্চিহ্ন ভাবে কয়েকজন কাউন্সলির দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে অংশ নিয়েছেন নির্বাচনে। তবে তাদের উপর নেমে আসছে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের শাস্তির খড়গ। অপর দিকে সরকার দলীয় আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের বিপক্ষে সিসিকে কোন হেভিয়েট প্রার্থী নেই। তবে জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল নিজেকে ভোটারদের কাছে পরিচিতির পাশাপাশি বিজয়ের হুংকার দিচ্ছেন। তিনি নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতের ভোট নিজের পক্ষে টানবেন বলে আত্মবিশ্বাসী হয়ে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবির বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান আরো পাকাপোক্ত করতে মরিয়া হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে অন্যান্য প্রার্থীরা প্রচারণায় বসে নেই। তারাও বিরামহীন ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সিসিক নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটলে প্রার্থীরা একে অন্যদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন। কারো আছে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে অভিযোগ আর কারো ‘সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন কমিশন’র পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ। এবারের নির্বাচনে ৬ জন মেয়র প্রার্থী ভোট লড়াইয়ে নেমেছেন। তারা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পাটি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু ও মো.ছালাহ উদ্দিন রিমন (স্বতন্ত্র)।
এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি ফলে এক রকম নিরোত্তাপ নির্বাচন উপভোগ করছে নগরবাসী। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দিয়েছেন। তবে এবার আরিফুল হক নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় গত রবিবার আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান আরিফুল হকের বাসায় গিয়ে পরামর্শ ও দোয়া নিয়ে আসেন। বিকালে আরিফুল হক চৌধুরীর বাসায় যান জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। তিনিও আরিফুল হকের বাসায় গিয়ে পরামর্শ ও দোয়া নিয়ে আসেন। যদিও তফসিল ঘোষনা হবার পরেই আরিফ ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী একে অপরকে উদেশ্য করে নানা রকম বক্তব্য দিয়ে ছিলেন। ছিলো পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়, সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। তিনি অভিযোগ করেন, সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয় নিরপেক্ষ নয়। তবে বাবুলের অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়রপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমার অভিযোগ করার মতো কিছু নেই। আমি কারো বিরুদ্ধে বক্তৃতা দেই না। অভিযোগ করার মতো কিছু নাই। আপনারা সাংবাদিকরা আছেন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন। আর যদি আমাদের পক্ষ থেকে যদি কোন ইয়ে ভ‚ল হয়। তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’ অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন মনোনীত প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান অভিযোগ তুলেছেন, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে।তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের এখনো অনেক বাকি। প্রতীকও বরাদ্দ হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে নির্বাচনের পরিবেশ ঘোলাটে হতে শুরু করেছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে এখনই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে জোর করে হলেও পাস করাতে হবে, এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।’ তবে এ অভিযোগ প্রসঙ্গে নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান বলেছেন, ‘ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। যারা বিভিন্ন প্রশ্ন তুলছেন তারা ইচ্ছা করেই আগে ভাগে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন।’ নির্বাচনে তফসিল অনুযায়ী ২৩ মে ছিলো মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ২৫ মে ও ১ জুনের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। তবে প্রতিক বরাদ্ধের আগেই এমন অভিযােগ নিয়ে নগরবাসী মনে করছেন। প্রার্থীরা ভোটারের মন আকৃষ্ট করতেই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ করছেন। শেষ পর্যন্ত একটি শান্তিপূর্ন ভোটই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরীর ওয়ার্ড ৪২টি। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজরা ভোটর রয়েছেন ৬ জন। মোট কেন্দ্র ১৯০টি যেখানে স্থায়ী ও অস্থায়ী ভোটকক্ষ থাকবে ১হাজার ৪৬২টি। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে সিসি ক্যামেরা বসানো।

৮৪৭ পড়েছেন