Sharing is caring!
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন :-সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের শীর্ষ চোরাকারবারি ও চোরাকারবারিদের গডফাদার আবুল হোসেন। সে জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুল খালিকের পুত্র। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ও অনুসন্ধানে জানা যায়, আবুল হোসেন হচ্ছেন সিলেটের জৈন্তাপুর ও হরিপুর এলাকার চোরাকারবারিদের গডফাদার। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, আজ থেকে দুই বছর পূর্বে যে আবুল জাফলং এর মামার দোকান এলাকায় খোলা পেট্রোল, ডিজেল, মবিল ও কেরোসিন বিক্রি করতো, সেই আবুল মাত্র দুই বছরের মাথায় চোরাচালানোর আলাদিনের চেরাগের কেরামতিতে এখন নিজেই একটি পেট্রোল পাম্পের মালিক। জৈন্তাপুর ও হরিপুরে রয়েছে তার প্রচুর ভূ-সম্পত্তি। আবুল কিভাবে এত অল্প সময়ে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক হয়ে গেলেন? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জৈন্তাপুর ও হরিপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের মাথায়। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, আবুল হোসেনে চোরাচালান জগতে প্রবেশ করেন ভারত থেকে অবৈধভাবে চা পাতায় এনে তা তিনি সিলেট শহরে বিক্রি করতেন, এভাবেই প্রথমে চোরাচালান জগতে পা রাখেন আবুল হোসেন। পরবর্তীতে তিনি নিজেই গড়ে তুলেন চোরাচালান ও চোরাকারবারীদের এক বিশাল সিন্ডিকেট। এবং রাতারাতি ফিল্মের খলনায়কদের মত তিনি বনে যান চোরাকারবারীদের গডফাদার।
আবুল হোসেনের বিপুল অর্থবিত্ত ও সম্পদের হিসাব দুদক যদি অনুসন্ধান করে তাহলে বেরিয়ে আসবে প্রকৃত থলের বিড়াল। এমন কোনো ভারতীয় অবৈধ পণ্য নেই যা আবুল ও তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সিলেট শহরে প্রবেশ করছে না। বর্তমানে আবুল হোসেনের চোরাচালানের প্রধান দ্রব্য হচ্ছে ভারতীয় চিনি সিলেটের তামাবিল সড়ক কোন পথে আবুল হোসেন ও তার সিন্ডিকেটের সদস্য দ্বারা প্রতিরাতেই প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে সিলেট শহরে প্রবেশ করছে শত শত ডিআই পিকাপ ভর্তি ও নৌকা বুঝাই ভারতীয় চিনি।
সিলেটের জৈন্তাপুর মডেল থানা ও শাহপরান ( রঃ ) থানার কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে আবুল হোসেন প্রতিরাতেই সিলেট শহরের কালীঘাটে প্রবেশ করাচ্ছে শত শত ডিআই পিকআপ ভর্তি ও নৌকা বুঝাই শুল্ক ফাঁকি দেয়া অবৈধ ভারতীয় চিনি।
অনুসন্ধানে প্রতিবেদক নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে একাধিক চুরাকারবারিদের সাথে ফোন আলাপ করলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্ত এই প্রতিবেদককে জানান, আমরা আবুলের মাধ্যমে সিলেট শহরে অবৈধ ভারতীয় চিনি এনে থাকি। প্রশাসন এই মালগুলো ধরে না কেন ? এ প্রশ্নের উত্তরে চোরাকারবারিরা বলেন ভাই, প্রশাসন তো আবুল ভাই নিয়ন্ত্রণ করে। আর রাস্তার টহল পুলিশকে গাড়ি প্রতি আগে পাঁচশত টাকা করে আমরা দিতাম এখন তা সাতশত করে দিলেই হয়।আর কালীঘাট পর্যন্ত মাল পৌঁছানোর জন্য ছাত্রলীগ ও যুবলীগের গুটিকয়েক নেতাকে গাড়ি প্রতি তিন হাজার টাকা করে দিলে আমাদের আর কোন অসুবিধা হয় না। ছাত্রলীগ যুবলীগ কাদের টাকা দিতে হয় এমন প্রশ্নের জবাবে চোরাকারবারি রা ছাত্রলীগের জেলা ও আনুগত পর্যায়ের দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা তাদের ফাইলমানের নাম উল্লেখ করে বলেন, আপনি যদি ব্যবসা করতে চান তাহলে আমরা আবুল ভাইকে বলে সবকিছু ঠিক করে দেব। আপনি চিন্তা করবেন না। আবুল সহ কয়েকজন ব্যবসয়ায়ীকে প্রশ্ন করলে আবুল বলে পুলিশ নেতাদের ম্যানেজ করেই লাইন চালাচ্ছে এবং মিডিয়ার মুলধারার সাংবাদিকদের গাড়ি প্রতি ২ হাজার টাকা করে দেই তাদের নাম বলার কথা বললে, বলে এরা বড় বড় সাংবাদিক, বলে কথা এরিয়ে যায় আবুল। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের নাম বিক্রি করে চালিয়ে যাচ্ছে তার এই বুঙ্গার ব্যবসা। এসব কথোপকথনের অডিও রেকর্ড প্রতিবেদক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সংরক্ষিত আছে। সিলেটে রাতের আঁধারে প্রবেশ করছে শত শত ডিআই পিকআপ ভর্তি ভারতীয় অবৈধ চিনি। এ নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন স্থানীয় পত্র পত্রিকা ও স্যাটেলাইট চ্যানেল ৭১ টিভিতে প্রকাশ করলেও থেমে নেই চোরাকারবারিদের গডফাদার কুখ্যাত চোরাকারবারি আবুল হোসেনের চোরাচালান বাণিজ্য। স্থানীয় এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন শুধু চিনি নয়, ভারতীয় চিনির বস্তার ভেতরে আবুল ইয়াবা, ফেনসিডিল ও মাদকের চালান বহন করে থাকে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেটে প্রবেশ করছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র শিরোনামে একাধিক দৈনিক পত্রিকায় কিছুদিন পূর্বে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এলাকাবাসীর ধারণা এসব ঘটনার সাথেও সম্পৃক্ত রয়েছে চোরাকারবারিদের গডফাদার আবুল হোসেন। এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) ওমর ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আবুল চিনি চোরাচালান সিন্ডিকেটের গডফাদার কি না তা আমার জানা নেই, আমরা এসপি স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক চোরাচালান বন্ধের জন্য কঠোর অবস্থানে আছি। গত সপ্তাহে প্রায় পাঁচটি গাড়ি আটক করেছি।এবং মামলা ও দিয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
৫৪৩ পড়েছেন