Sharing is caring!
কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানের চা শ্রমিক কন্যা স্কুল ছাত্রী পূর্নিমা রেলী (১০) এর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থী ও চা শ্রমিক জনগোষ্ঠী।
শমশেরনগর চা বাগানের ৬ নম্বর শ্রমিক বস্তির চা শ্রমিক আপ্পানা রেলীর মেয়ে পূর্নিমা রেলী গরু আনতে গিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নিখোঁজ হয়। পরদিন ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে চা বাগান লেকের ধারে গলাকাটা ও হাতের কব্জি কাটা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল তৈরী করে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। শুরু থেকেই চা বাগান শ্রমিকরা ধারণা করে শিশু পূর্নিমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে গলা ও হাতের কব্জি কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
স্কুল ও চা বাগান শ্রমিকদের আয়োজনে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় শমশেরনগর চা বাগানের চাতলাপুর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালিত হয়। বিক্ষোভ কর্মসূচী থেকে বক্তারা এই নৃশংস হত্যাকান্ডের আসামীদের পক্ষে না দাঁড়ানোর জন্য আইনজীবিদের আহবান জানান।
গ্রেফতার আসামীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে স্কুল শিক্ষার্থী, চা শ্রমিক, বাগান পঞ্চায়েত ও জনপ্রতিনিধিরা মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। শমশেরনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোপাল গোয়ালার পরিচালনায় চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা নির্মল দাস পাইনকার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চা শ্রমিক নেতা আব্দুল আহাদ, সাবেক ইউপি সদস্য সীতারাম বীন, স্কুল শিক্ষিকা মনি গোয়ালা, শমশেরনগর চা বাগান ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী, সমাজ সেবক সৈয়দ ইসতিয়াক উদ্দীন বাবেল, সাংবাদিক এম.এ.ওয়াহিদ রুলু, নূরুল মোহাইমীন, সালাহউদ্দীন শুভ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, চা বাগানের অবুঝ শিশুটিকে ধর্ষকরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এদের কোন অবস্থাতেই ছাঁড় দেয়া যাবে না। বিচারের মাধ্যমে এদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে এবং এই আসামীদের পক্ষে আদালতে কোন আইনজীবি না দাঁড়ানোর আহবান জানান।
এ ঘটনার ১৭ দিন পর ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘটনায় জড়িত একই বাগানের দিবস রেংগেট (১৯) এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে উজ্জ্বল বাউরি প্রকাশ ডন (২৩)কে গ্রেফতার করা হয়। আসামী দিবস রেংগেট ধর্ষন করতে ব্যর্থ হয়ে এবং ঘটনা ধামাচাপা দিতে পূর্নিমা রেলীকে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করে।
কিশোরী পূর্ণিমা রেলী শমশেরনগর চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনির শিক্ষার্থী ছিল। তার মুখ চেপে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষন করতে চাইলে তাতে বাঁধা দিলে আসামীরা নৃশংসভাবে হত্যা করে ফেলে যায়। এঘটনায় চা শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।
৪২ পড়েছেন