• ২৩শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৫শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ছুরিকাঘাতে ফাহিম আহমদ হত্যার ঘটনায় অন্য রহস্যের দাবি ভাইয়ের

admin
প্রকাশিত মে ১১, ২০২৫
ছুরিকাঘাতে ফাহিম আহমদ হত্যার ঘটনায় অন্য রহস্যের দাবি ভাইয়ের

Sharing is caring!

সিলেটের গোলাপগঞ্জে ছুরিকাঘাতে ফাহিম আহমদ (২৭) হত্যার ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করলেও নিহতের ভাই করছেন ভিন্ন দাবি। রোববার (১১ মে) বিকালে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ফাহিমের ভাই মো. মহসিন কামরান জানান- হত্যাকাণ্ডের ইন্ধদাতা অন্য কেউ হতে পারেন এবং এ ঘটনার পেছনে অন্য কারণ থাকতে পারে।গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম বারোকোট গ্রামের মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম, তার ছেলে সাঈদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯)।জায়গা-জমির বিরোধ নিয়ে ৩০ এপ্রিল রাতে গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের বারোকোট গ্রামে মাওলানা আব্দুল আলিমের ছেলে ফাহিম আহমদ আপন ফুফাতো ভাইদের হাতে ছুরিকাঘাতে খুন হন।পরে ফাহিমের বাবা বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ৯ মে মধ্যরাতে প্রধান অভিযুক্ত তিনজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ থানাপুলিশ।লিখিত বক্তব্যে মহসিন কামরান বলেন- ‘আমার ফুফুর বাড়ি একই ইউনিয়নের পূর্বখদাপাড়া গ্রামে । কিন্তু ফুফা জিলাল উদ্দিন ও তার ছেলেরাসহ আমার ফুফু কুলসুমা বেগমের বদমেজাজ ও দুর্ব্যাবহারে অতিষ্ঠ হয়ে ১৫/১৬ বছর আগে গোটা পরিবারকে ত্যাজ্য করে তার পিতা (ফুফার পিতা) বাড়ি থেকে বের করে দেন। তারা তখন বিভিন্ন কলোনিতে ভাড়াটিয়া হিসাবে থাকতে শুরু করেন । আমার দাদা ও বাপ-চাচারা নিজের মেয়ে- নাতি, বোন-ভাগ্নাদের এমন দুরবস্থা মেনে নিতে পারেন নি । তাই তারা তাদেরকে আমাদের বাড়িতে এনে থাকতে দিয়েছিলেন । তাদের এখানে এনে যে খাল কেটে কুমির আনা হয়েছে তা বুঝতে বেশি দেরি হয়নি । আমাদের বাড়িতে এসেই তারা নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে । শুরু হয় চরম অশান্তি । ফুফু ফুফা ও তাদের সন্তানরা মিলে অযৌক্তিক জায়গা জমি দেয়ার দাবি জানালে আত্মীয় স্বজন এবং গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বারবার সালিশ বসে। কিন্তু তারা সালিশের কোনো সিদ্ধান্তই মানেনা । বরং সবসময় উস্কানি দিয়ে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত থাকে। তারা আমাদের শত্রু হিসাবে বিবেচনা করে এবং মিথ্যা অভিযোগে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করতে করতে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ করে ফেলেছে । আমার ছোটো ভাই ফাহিম এই শহরেই থাকতো ।লিখিত বক্তব্যে কামরান আরও বলেন- ‘গত ৩০ এপ্রিল দিবাগত মধ্যরাতে বাড়ি ফিরে । আমার আম্মা ঘরে না থাকায় তাকে ডাকতে থাকলে আমার ফুফু কুলসুমা বেগম ও দুই ফুফুতো ভাই ঘাতক সাঈদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকে ও গালাগাল শুরু করে । ফাহিম প্রতিবাদ করলে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তাকে চেপে ধরে এবং সাঈদ তার পেটে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে । চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাড়ির সবাই ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই । জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করলে সেখানে নিয়ে ভর্তি করা হলেও সকাল আটটার দিকে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। পরদিন ২ মে আমার বাবা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা (নং ৩/০২/০৫/২০২৫) দায়ের করেন । মামলায় আসামী করা হয় কুলসুমা বেগম, সাঈদ আহমদ ও মাহিদ আহমদকে । মামলার এফআইআর হলেও প্রায় ৮ দিনেও কোনো আসামী ধরা সম্ভব হচ্ছিলনা । আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানীতে গত শুক্রবার (৯ মে) রাত ১১টার দিকে ব্রাম্মনবাড়িয়া সদরের একটি কলোনি থেকে ৩ আসামীকেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ । তারা এখন কারাগারে ।এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে অন্য কারণ থাকতে পারে উল্লেখ করে মহসিন কামরান বলেন- সামান্য জায়গা-জমির বিরোধেই এমন বর্বর ঘটনা ঘটতে পারে না। আমি মনে করছি- এ ঘটনার নেপথ্যে ইন্ধনদাতা কেউ থাকতে পারেন এবং হত্যার অন্য কারণ থাকতে পারেন। গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আশা করছি আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।এছাড়া গ্রেফতারকৃত আসামিদের ফাঁসি দাবি করেছেন ফাহিমের ভাই কামরান।

২৫ পড়েছেন