Sharing is caring!
শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তবে ঘটেছে চোখে দাঁত গজানোর এমন ঘটনা।
ভারতের বিহারের পাটনার ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (আইজিআইএমএস) হাসপাতালে ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তির চোখ থেকে দাঁত অপসারণ করেছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এটি অত্যন্ত বিরল একটি ঘটনা।রোগী, যাকে প্রতিবেদনে রমেশ কুমার (নাম পরিবর্তিত) বলা হয়েছে, প্রথমে দাঁতের সমস্যায় স্থানীয় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। পরে তার চোখের কাছে পিণ্ডের মতো ফোলাভাব ও ঝাপসা দেখার সমস্যা দেখা দিলে তাকে পাটনার হাসপাতালে পাঠানো হয়। সিবিসিটি স্ক্যানের মাধ্যমে ধরা পড়ে তার চোখের নিচের অংশে দাঁত গজিয়েছে।ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জন ডা. প্রিয়ঙ্কর সিং বলেন, রোগীর দাঁতের গোড়া ছিল চোখের ‘ফ্লোর অব অরবিটে’ এবং ক্রাউন অংশ ম্যাক্সিলারি সাইনাসে। শরীর এটিকে ‘ফরেন বডি’ হিসেবে গণ্য করে চারপাশে সিস্ট তৈরি করেছিল। ফলে রোগীর চোখে চাপ পড়ছিল ও মুখে ফোলাভাব তৈরি হচ্ছিল।আইজিআইএমএস এর ওএমআর বিভাগের প্রধান ডা. নিম্মি সিং জানান, এটি এক ধরনের বিকাশজনিত অসংগতি। মাতৃগর্ভে ভ্রূণের মুখমণ্ডল গঠনের সময় দাঁত তৈরির উপাদান স্বাভাবিক জায়গা থেকে সরে গিয়ে চোখের নিচে অবস্থান নিয়েছিল। এর ফলে দাঁতটি অস্বাভাবিক স্থানে গজায়।রোগীর বয়স ও পেশার কথা বিবেচনা করে চিকিৎসকরা মুখের ভেতর দিয়ে (ইন্ট্রা ওরাল পদ্ধতিতে) অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। প্রায় ১০–১২টি সেলাই লাগে। দাঁতটি প্রি-মোলার দাঁতের সমান আকারের ছিল। বর্তমানে রোগীর দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রয়েছে এবং তিনি সুস্থ আছেন।ভারতে এ পর্যন্ত এমন মাত্র দুই থেকে তিনটি ঘটনার সন্ধান পাওয়া গেছে। ২০২০ সালে চেন্নাইতেও অনুরূপ এক সার্জারি করেছিলেন বিশেষজ্ঞ এস এম বালাজি। চিকিৎসকদের মতে, একবার অপসারণের পর এ ধরনের দাঁত আবার গজানোর সম্ভাবনা নেই। তবে রোগীকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।চিকিৎসকদের মতে, চোখে দাঁত গজানো চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে বিরল হলেও সঠিক সময়ে শনাক্তকরণ ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব।অস্ত্রোপচারের পর রমেশ কুমার বলেন, আমার স্ত্রী খুবই চিন্তিত ছিল, প্রায়ই কেঁদেছে। গ্রামের মানুষজন খবর নিয়ে যাচ্ছেন। আমি এখন আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে চাই, স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতে চাই।
৩ পড়েছেন