• ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বাংলাদেশের পর নেপাল,আর কোন দেশে আঘাত হানতে যাচ্ছে এই জেন-জি ঝড়

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫
বাংলাদেশের পর নেপাল,আর কোন দেশে আঘাত হানতে যাচ্ছে এই জেন-জি ঝড়

Sharing is caring!

শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশের পর এবারের মঞ্চ নেপাল।আরেকটি জেন-জি বিপ্লবের সফল পরিণতি দেখলো বিশ্ব। মাত্র দুইদিনের এক ঝড়ে ওলটপালট হয়ে গেল পুরো দেশের শাসন ব্যবস্থা।মন্ত্রী-এমপিদের বাসভবন, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনাসহ সংসদ ভবন এলাকায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। অপরদিকে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন ছাত্র। ব্যাপক চাপের মুখে পদত্যাগপত্র লিখে হেলিকপ্টারে উড়ে পালিয়ে গেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। গণপিটুনির শিকার হয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আতঙ্কে গা-ঢাকা দিয়েছেন সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী-এমপিরা।ঠিক যেন বাংলাদেশে গত বছর হয়ে যাওয়া জুলাই অভ্যুত্থানের অবিকল কপি। প্রায় একইরকম ঘটনা ঘটেছে আরও দুই বছর আগে শ্রীলঙ্কায়। খুব সামান্য ইস্যুতে থেকে উদ্ভূত আন্দোলন পরিণত হয়েছে বিশাল ঝড়ে।অনেকেরই এখন প্রশ্ন, এরপর আর কোন দেশে আঘাত হানতে যাচ্ছে এই জেন-জি ঝড়। ইঙ্গিতটা অনেকটা ভারতের দিকে।খোদ ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির মিত্রশক্তি শিবসেনার নেতারাই আশঙ্কা করছেন, গভীরভাবে এ নিয়ে ভাবার সময় এসেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য। এখনই সতর্ক না হলে শেখ হাসিনা ও কেপি শর্মা অলির মতো একইরকম পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে মোদিকেও।তাদের মতে, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে এই জেন-জি ঝড়ের তাৎক্ষণিক এবং গভীর প্রভাব রয়েছে ভারতের জন্যও।মূলত, সরকার ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করার পর যে বিক্ষোভ দেখিয়েছে নেপালের জেন-জি, তা সাধারণ অন্য কোনও আন্দোলনের মতো নয়। তরুণ নেপালিরা যে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছেন তা কেবল ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং এক্স-এর জন্য ছিল না। এই সংকটের শিকড় আরও গভীরে। শাসন ব্যবস্থায় দীর্ঘদিনের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি, ক্রমবর্ধমান বেকারত্বই প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে এ আন্দোলনের পেছনে।ঠিক এ বিষয়টিই তুলে ধরে নরেন্দ্র মোদিকে কঠিন এক সতর্কবার্তা দিয়েছেন শিবসেনার এমপি সঞ্জয় রউত। তিনি বলেছেন, দুর্নীতি, স্বৈরাচারী শাসন, স্বজনপ্রীতি বিরুদ্ধে নেপালে যে ‘আগুনের সূত্রপাত’ হয়েছে, সেটি ভারতেও লাগতে পারে। তবে, ভারতে এখনো এমন কিছু হচ্ছে না; কারণ ভারতীয়রা মহাত্মা গান্ধার অহিংসা নীতি মেনে চলে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ‘শুধুমাত্র মহাত্মা গান্ধীর মতাদর্শের’ কারণে বেঁচে যাচ্ছে।শিবসেনার এ নেতা বলেন, নেপালের এই স্ফুলিঙ্গ যদি ভারতে আসেৃ ভারত আজ পর্যন্ত টিকে আছে কেবল মহাত্মা গান্ধী এখানে জন্মেছিলেন বলেই। আজও মানুষ গান্ধীকে বিশ্বাস করে, সেই কারণেই এই মানুষগুলো টিকে আছে। মোদিজি, আপনি গান্ধীকে যতই গালাগালি করুন না কেন, আপনার সরকারও গান্ধীর আদর্শের কারণেই টিকে আছে।সঞ্জয় বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেন, এর মানে কী? এর মানে হলো দেশে এখনও গরিব মানুষ আছে। নেপালেরও একই অবস্থা ছিল। ভারতের টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। কারও ছেলে দুবাইয়ে, কারও ছেলে সিঙ্গাপুরে, কেউ আবার ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছে।এ অবস্থায় মাথার ওপর জেঁকে বসা জেন-জি ঝড় এড়াতে চাইলে মোদি সরকারকে তরুণদের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে বলে অভিমত অনেক বিশ্লেষকের। বেকারত্বকে গুরুত্ব দিতে হবে অবকাঠামোগত উন্নয়নের মতোই। এ ছাড়া, প্রশাসন সংস্কারকেও বিচক্ষণতার সঙ্গে সমর্থন করা উচিত। ডিজিটাল অবকাঠামো, সাইবার নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণে সহায়তাকে প্রেসক্রিপশন নয়, অংশীদারিত্ব হিসেবে রূপ দেওয়া উচিত।মোদি সরকারের পররাষ্ট্রনীতি পুরোপুরি ব্যর্থ দাবি করে এ রাজনীতিবিদ আরও বলেন, নেপাল একসময় আমাদের বন্ধু ছিল, নেপাল ভারতকে বড় ভাই মনে করত। নেপালের যখন সংকট ছিল, তখন বড় ভাই তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। এটি আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতা।

পড়েছেন