• ১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেটে একদিনে ৬ দফা ভূমিকম্প: জনমনে আ্তংক

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫
সিলেটে একদিনে  ৬ দফা ভূমিকম্প: জনমনে আ্তংক

Sharing is caring!

স্টাফ রির্পোট: গতকাল রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভারতের আসামের গুয়াহাটি থেকে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে উদালগুড়িতে ঘটে যায় ৫ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প। এই কম্পন বাংলাদেশে, বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলে বেশি অনুভূত হয়। ভূমিকম্পে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। মানুষজন বাসাবাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। রবিবার বিকেল ৫টা ১৩ মিনিটের দিকে প্রথম কম্পনটি অনুভূত হয়। এরপর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৬ দফা আফটারশক হয়েছে। বিকেল ৫টা ২৮ মিনিটে ৩ দশমিক ১, ৫টা ৫১ মিনিটে ২ দশমিক ৯, ৬টা ৪১ মিনিটে ২ দশমিক ৭, রাত ১২টা ১৯ মিনিটে আবারও ৩ দশমিক ১, রাত ২টা ২২ মিনিটে ২ দশমিক ৮ এবং আজ সোমবার সকাল ১০টা ৪৯ মিনিটে আরেকটি ৩ দশমিক ১ মাত্রার কম্পন রেকর্ড করা হয়। তবে এসব কম্পনের মাত্রা কম ও উৎপত্তিস্থল দূরে হওয়ায় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও তেমন একটা অনুভূত হয়নি। ভূমিকম্প বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সবগুলো ভূমিকম্পের কেন্দ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্য ও ভুটান সীমান্তের সংলগ্ন অঞ্চলে। যা সিলেট থেকে গড়ে ১৯৩ থেকে ২১৭ কিলোমিটারের মধ্যে ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় ভূমিকম্পের পর এই ধরনের আফটারশক ঘটে থাকে। এই অঞ্চলের ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থা জটিল, এবং বৃহত্তর কম্পনের সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হলো কোপিলি ফল্ট জোন। এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম উপত্যকা থেকে ভুটান সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত একটি সক্রিয় ফল্ট। কোপিলি ফল্টে ভবিষ্যতে আরও বড় ভূমিকম্পের আশংকা আছে। অন্যদিকে, ডাউকি ফল্ট সিলেটের খুব কাছেই। ফলে, ভূমিকম্পের প্রভাব শুধুমাত্র উৎপত্তিস্থলেই সীমাবদ্ধ নয়, সিলেটের নগর এলাকা ও আশেপাশের জেলা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। সিলেট শহরের পুরনো অনেক বহুতল ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বড় ভূমিকম্প হলে এসব পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) ২০১৯ সালে ২৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের একটি তালিকা তৈরি করে। এর মধ্যে সংস্কারের মাধ্যমে ৬টি ভবন ঝুঁকিমুক্ত করা হয়েছে। বাকি ১৮টি ভবন এখনো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সিসিক ইতিমধ্যে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংস্কার বা অপসারণ করেছে, আর বাকি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার সিলেটভিউকে বলেন, ‘সিলেট মহানগরীতে যে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো রয়েছে সেই ভবনগুলোর সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা খুব শীঘ্রই একটি পদক্ষেপ নেব। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে একটি কমিটি আছে, তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যে ভবনগুলোতে সংস্কার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা তাদের সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে আমাদের কাছে তাদের কাগজপত্রাদি দাখিল করবে, আমরা সেটা খতিয়ে দেখে পরবর্তী নির্দেশনা দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমিকম্প প্রতিরোধী নকশা বাধ্যতামূলক করা হবে। একইসাথে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর অপসারণ ও সংস্কার কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’

১৩৫ পড়েছেন