• ২৮শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন স্থগিত হওয়ার খবরে ক্ষোভে ফুঁসছে ব্যবসায়ীরা

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ২৭, ২০২৫
সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন স্থগিত হওয়ার খবরে ক্ষোভে ফুঁসছে ব্যবসায়ীরা

Sharing is caring!

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসসিসিআই) নির্বাচন স্থগিত হওয়ার খবরে ক্ষোভে ফুঁসছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ও প্রচারণার মধ্যেই হঠাৎ এ সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ী সমাজে নেমে এসেছে অস্থিরতা, ক্ষোভ ও হতাশা।সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ‘সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ’-এর নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন এবং নির্বাচন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান। জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে করা অভিযোগ প্রত্যাহার করা হলে স্থগিতাদেশ পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে।’ এই আশ্বাসে কিছুটা আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ী নেতারা।ব্যবসায়ী পরিষদের নেতারা জানান, ‘নির্বাচন স্থগিতের কারণে চেম্বারের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে, ব্যবসার গতি মন্থর হয়ে গেছে। তাদের দাবি, নির্বাচন পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হোক। তারা বলেন, ‘আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় জয়লাভ করব, ইনশাআল্লাহ।’প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল একই দিন দুপুরে নগরীর নাইয়রপুলের ফুড প্যারাডাইজ ইন-এ সংবাদ সম্মেলন করে ‘সিলেট ব্যবসায়ী ফোরাম’। তারা সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়ে পূর্বনির্ধারিত তারিখে (১ নভেম্বর) নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।সোমবার (২৭ অক্টোবর) সিলেট নগরীর এক হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সভাপতি পদপ্রার্থী এহতেশামুল হক চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘সিলেট চেম্বারের নির্বাচন ব্যবসায়ী সমাজের গণতান্ত্রিক অধিকার ও মর্যাদার প্রতীক। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই নির্বাচন বানচালের অশুভ প্রচেষ্টা চলছে।’ তিনি জানান, ‘এবারের নির্বাচনে সিলেট ব্যবসায়ী ফোরাম পূর্ণাঙ্গ প্যানেল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। অন্য প্যানেলের অর্ডিনারি পরিচালক পদে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় বিজয়ের সম্ভাবনা আরও স্পষ্ট হয়েছিল। এমন সময় নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।এহতেশামুল হক দাবি করেন, ‘যাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে সিলেট ব্যবসায়ী ফোরামের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি বলেন, “প্রতিপক্ষ প্যানেল আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছে, যা সম্পূর্ণ অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিলেট ব্যবসায়ী ফোরাম সবসময় ব্যবসায়ী সমাজের ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় কাজ করে আসছে। আমরা চাই নির্বাচন নির্ধারিত তারিখেই অনুষ্ঠিত হোক। এখন সময় একে অপরের বিরুদ্ধে নয়, বরং নির্বাচনের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।’সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত থেকে ঘোষণা দেন, নির্বাচন স্থগিতের ষড়যন্ত্র রুখতে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।চেম্বারের প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইদা পারভীন জানান, ‘ভোটার তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যাচাই শেষে নতুন তফসিল ঘোষণা করা হবে।’আগে রবিবার (২৬ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন-১ শাখার উপসচিব চৌধুরী সামিয়া ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে (স্মারক নম্বর: ২৬.০০.০০০০.০০০.১৫৬.৩২.০০০১.৯২.২৭১) সিলেট চেম্বারের ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়। চিঠিতে সদস্যপদ যাচাই-বাছাই করে পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নতুন তারিখে নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে চিঠিতে স্থগিতের স্পষ্ট কারণ উল্লেখ না থাকলেও ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।নির্বাচন স্থগিতাদেশ ঘোষণার পর ‘সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ’ এবং ‘সিলেট ব্যবসায়ী ফোরাম’ দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন।রবিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এর আগে বিকেল চারটায় নগরীর হোটেল স্টার প্যাসিফিকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ অভিযোগ করে, ‘নিরঙ্কুশ বিজয়ের জোয়ার দেখে প্রতিপক্ষ নির্বাচন স্থগিত করিয়েছে।এ নির্বাচনে দুটি প্যানেল ‘সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ ও সিলেট ব্যবসায়ী ফোরাম’ থেকে মোট ৪২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। তফসিল ঘোষণা, মনোনয়ন যাচাইসহ সব প্রক্রিয়া শেষ হলেও ভোটের মাত্র পাঁচ দিন আগে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ব্যবসায়ী মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে।

পড়েছেন