• ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

দক্ষ কর্মীদের জন্য সবচেয়ে বড় ভিসা কর্মসূচি এইচ-১বি সম্পূর্ণ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ১৫, ২০২৫
দক্ষ কর্মীদের জন্য সবচেয়ে বড় ভিসা কর্মসূচি এইচ-১বি সম্পূর্ণ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে

Sharing is caring!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য সবচেয়ে বড় ভিসা কর্মসূচি এইচ-১বি সম্পূর্ণ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে ।একের পর এক নিয়ম বদলানোর পর এবার শেষ পর্যন্ত এই ভিসা কার্যক্রম একেবারে বাতিলের জন্য প্রস্তাব তোলা হয়েছে কংগ্রেসে।শনিবার (১৫ নভেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভির পৃথক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।কট্টর ডানপন্থি ও অভিবাসনবিরোধী হিসেবে পরিচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মার্জোরি টেইলর গ্রিন গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিলটি উত্থাপন করেন। বিলটি উপস্থাপনের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক ভিডিও বার্তায় গ্রিন বলেন, এইচ-১বি কর্মসূচি ‘প্রতারণা ও অপব্যবহারে ভরা’, যা বহু বছর ধরে মার্কিন কর্মীদের ‘বঞ্চনার’ মুখে ফেলেছে।নতুন বিলে অবশ্য বিদেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সীমিত ছাড় রাখা হয়েছে। প্রতি বছর সর্বোচ্চ ১০ হাজার জনকে নেওয়ার সুপারিশ রয়েছে। তবে, তারা আর মার্কিন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।কট্টর ডানপন্থি এ নেত্রীর দাবি, এইচ-১বি ভিসা ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানি ও হাসপাতালগুলো আমেরিকান নাগরিকদের বাদ দিয়ে বিদেশিদের চাকরি দিয়েছে।তিনি আরও বলেন, বিলটি পাস হলে বিজ্ঞান–প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রকৌশলসহ সব খাতে মার্কিনদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে ‘বিদেশি মেধার ওপর নির্ভরতা কমাতে’ এই কর্মসূচি বাতিল করা প্রয়োজন বলে অভিমত তার।২০০৪ সালে চালু হওয়া এইচ-১বি ভিসায় প্রতি বছর ৮৫ হাজার বিদেশি বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রে কাজের অনুমতি পান। অ্যামাজন, গুগল, মাইক্রোসফট, মেটা ও অ্যাপলের মতো যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কোম্পানিগুলো এই ভিসার সুবিধা নেয়। এই ভিসা কর্মসূচির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে শুধু কাজের সুযোগই মেলে না; এইচ-১বি ভিসাধারীরা নির্দিষ্ট সময় পর যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি এবং পরবর্তীতে নাগরিকত্বের জন্যও আবেদন করতে পারেন।তবে, দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপের ধারাবাহিকতায় এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত নিয়মে গত কয়েক মাসে একের পর এক বদল এনেছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রথমেই জানানো হয়, এখন থেকে এই ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলোর কাছ থেকে এক লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা) নেওয়া হবে।যাদের ইতোমধ্যেই এইচ-১বি ভিসা রয়েছে, তাদেরকে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে পুনঃপ্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো টাকা দিতে হবে না। কেবলমাত্র যারা নতুন করে এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাদের জন্য সংশ্লিষ্ট মার্কিন সংস্থাকে এক লাখ ডলার দিতে হবে সরকারকে। শুধু তা-ই নয়, প্রচলিত লটারি ব্যবস্থা বাতিল করে একটি নতুন বাছাই প্রক্রিয়াও চালু করা হবে বলে জানায় ওয়াশিংটন।এরই মধ্যে চলতি সপ্তাহে এইচ-১বি ভিসা ইস্যুতে সুর কিছুটা নরম করে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে সত্যিই বিদেশি প্রতিভা আনা প্রয়োজন। কারণ এখনও বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্ঞান ও দক্ষতার নিরিখে পিছিয়ে রয়েছেন মার্কিন কর্মীরা।এইচ-১বি ভিসার নিয়মে আরও একবার পরিবর্তন এনেছে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, এখন থেকে বিদেশি কর্মীদের অস্থায়ীভাবে এইচ-১বি ভিসা প্রদান করা হবে। আগামী বছরের শুরু থেকেই চালু হতে যাচ্ছে নতুন নিয়ম।নতুন নিয়ম অনুযায়ী, অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মীরা এখন থেকে কয়েক বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসতে পারবেন। এরপর তারা মার্কিন কর্মীদের ‘প্রশিক্ষণ’ দেবেন। প্রশিক্ষণ শেষে তারা আর থাকতে পারবে না। ফিরতে হবে নিজ দেশে।বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানান, এখন থেকে শুধু দক্ষ বিদেশি কর্মীদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে আনা হবে, তাও সাময়িকভাবে। গত প্রায় ২০-৩০ বছর ধরে আমরা বাইরে থেকে উৎপাদন শিল্পের জন্য লোক এনেছি। ফলে আমরা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না যে রাতারাতি জাহাজ তৈরি করে ফেলতে পারব। আমরা সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকেও আমেরিকায় ফিরিয়ে আনতে চাই। তাই মার্কিন উৎপাদন খাতকে পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যেই এই নতুন নীতি।ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, নতুন এইচ-১বি ভিসা নীতির লক্ষ্য হলো বিদেশি কর্মীদের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নির্ভরতার পরিবর্তে উচ্চ-দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের এনে মার্কিনিদের চাকরির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া, যাতে তারাও সমান দক্ষ হয়ে ওঠেন।

৫৫ পড়েছেন