• ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৪শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ডিসির নির্দেশের পরও বন্ধ নেই জাফলংয়ে বালু উত্তোলন

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ৩, ২০২৫
ডিসির নির্দেশের পরও বন্ধ নেই জাফলংয়ে বালু উত্তোলন

Sharing is caring!

স্টাফ রির্পোটার: সিলেট জেলা প্রশাসক (ডিসি) নির্দেশের পর বন্ধ নেই সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার অবৈধ বালু উত্তোলন। উপজেলার নয়াবস্তি এলাকার মৃত মোস্তফা মিয়ার ছেলে হাবিবুল্লা, ওরফে হাবুল্লা। ছৈলাখেলগ্র্রামের শিরাজ মিয়ার ছেলে মানিক-লোক মুখে কালো মানিক। যুবদল নেতা মাহমুদ গড়ে তুলেছেন একটি অবৈধ বালু সিন্ডিকেট। পুলিশের নামে লাইনের টাকা তুলে দিনে রাতে জাফলং জিরো পয়েন্টের আশপাশ, জাফলং চা বাগান এলাকার নদী থেকে লাখ-লাখ ঘণফুট বালু উত্তোলন করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত বছরের ৫ আগস্টের আগে হাবিবুল্লা ছিলো সামান্য একজন বারকি শ্রমিক। সরকারে পট পরিবর্তনের পর ঝুমপার থেকে শুরু হয় পাথর লোপাটের মহা উৎসব-সেই উৎসবে ছিলেন সক্রিয় ছিলেন হাবিবুল্লা। তৎকালীন সময়ের স্থানীয় প্রশাসন ও উপর মহলের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে দিনে ও রাতে অবৈধ ভাবে তুলতেন পাথর। পাথর লুটে প্রশাসনিক অভিযান হলেও তিনি বা তার বাহিনী সব সময় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকেন। লাগাতার অভিযান ও নদীতে পানি আসার কারণে বন্ধ হয়ে যায় পাথর উত্তোলন। পাথর উত্তোলন বন্ধ হলেও হাবিবুল্লা বারকি শ্রমিক নেতা। বারকি শ্রমিকদের মজুদ করা জমিদার মসজিদের পাশ ও জাফলং চা বাগান এলাকার নদী থেকে মেশিন দিয়ে বালু উত্তলোন করা শুরু করেন তিনি। মাত্র কয়েক মাসে হাবিবুল্লার কিনেছেন ৮টি ড্রেজার মেশিন, যার প্রতিটির বাজার মূল্য প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। কিনেছেন দুটি সেভ মেশিন যার বাজার মূল্য দেড় লক্ষ টাকা। অংশিধারিত্ব কিনেছেন ক্রাশার মিলের। বানিয়েছেন বিশাল অট্টালিকা।
শ্রমিকরা অভিযোগ করনে, জাফলং বাজারের জমিদার মসজিদের পাশে নদী থেকে বারকি শ্রমিকরা বালু তুলে মজুদ করেন। সেই মজুদ করা বালু বিক্রি করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন বারকি শ্রমিকেরা। সেখানেই নতুন করে পুলিশের ওসি ও স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশের নামে চাঁদা তুলেন হাবিবুল্লা, মানিক ও যুবদল নেতা মাহমুদ।
মানিক ৫ আগস্টের আগে ছিলেন বারকি নৌকা সমিতির সভাপতি। পট পরিবর্তনের পর রাতারাতি এখন কোটি টাকার মালিক। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে রয়েছে মানিকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। প্রায় সময় রাতে স্থানীয় পুলিশ নদীতে অভিযান করলে সেই অভিযানে পুলিশের সাথে দেখা মেলে মানিকের। শ্রমিকরা জানান, যখনই নদীতে অভিযান হয়, সেই অভিযানের জন্য নৌকা ভাড়া করে দেন মানিক। স্থানীয় নৌকা চালক সোহেলের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন মানিক। সেই সুবাধে সোহেলের সাথে অভিযানে যান মানিক। সেই সুবাদে কিছু পুলিশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন মানিক। শ্রমিকরা জানান, নদী থেকে সনাতন পদ্ধতিতে বালু তোলে জমিদারঘাটে আনার পর পাইকারের কাছে বিক্রি করতে হয় অর্ধেক দামে। অর্ধেক দামের কারন জানতে চাইলে তারা বলেন, ক্রেতারা বালু নিয়ে যাবার সময় হাবিবুল্লা বাহিনীকে দিতে হয় চাঁদা। চাঁদা না দিলেই পুলিশ দিয়ে গাড়িসহ বালি জব্দ করানো হয়। যে গাড়ি তাদের চাঁদা দেয়, সেটিই নির্বিঘ্নে নিজ গন্তব্যে পৌঁছে যায়। জমিদার মসজিদের পাশ থেকে প্রতি ট্রাক থেকে ১ হাজার টাকা এবং ট্রাক্টর থেকে ৫শত টাকা করে চাঁদা তুলেন হাবিবুল্লা বাহিনী। চাঁদা না দিলে গাড়ি পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ পুলিশ সরাসরি এসব চাঁদাবাজীতে জড়িত। সেই গাড়ি ধরার খবর প্রকাশ্যে আসে না বলে জানায় ভূক্তভোগীরা।
রাত হলেই জাফলংয়ের চা বাগান এলাকায় হাবুবল্লা, কালো মানিক ও মাহবুবের নেতৃত্বে অন্ধকারে এবং ভোর পর্যন্ত চলে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করেন । পুলিশ অভিযানে নামার আগেই তাদের কাছে খবর পৌঁছে যায়। ফলে অভিযানে আড়াল পড়ে যাচ্ছেন তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিবুল্লার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি চাঁদা তুলি না, আমি নৌকা থেকে বালু কালেকশন করি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় নলজুড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মারুফ জানান, এই ধরনের অভিযোগ শুনেছি। তবে মাঠে গেলে প্রমাণ মিলেনা। জমিদার মসজিদের পাশে আমাদের পুলিশ সদস্য ডিউটি করছে। আমাদের জনবল কম, এলাকা অনেক বড়। তার পরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রশ্ন হচ্ছে জেলা প্রশাসক ওপুলিশ সুপারের এতো কঠিন নির্দেশ থাকার পরও কি করে এই সিন্ডিকেট অবৈধ ভাবে স্থানীয় পুলিশকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে

৬৮ পড়েছেন