Sharing is caring!
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সবাই একমত হলেও তার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অহেতুক সাংবিধানিক বিতর্ক তুলে বারবার জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে। সংবিধানের দোহাই দিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করলে আরেকটি অভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়বে।তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, আরেকটি অভ্যুত্থান হলে গণরোষ থেকে পালিয়ে বাঁচার জন্য জটিলতা সৃষ্টিকারীদের অনেকগুলো বড় বড় হেলিকপ্টার দরকার হতে পারে।রোববার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এসব কথা বলেন মঞ্জু।দীর্ঘ বিরতির পর সকাল সাড়ে ১১টায় এই বৈঠক আবার শুরু হয়। কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হকও দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন।সভা শেষে মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, সনদ মোটামুটি চূড়ান্ত হওয়ার পর এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমরা কেউ কেউ অতিরিক্তভাবে আইন ও সাংবিধানিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছি। অথচ শেখ হাসিনা সংবিধানের দোহাই দিয়ে চরমভাবে সংবিধানকে পদদলিত করে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন চালিয়েছিলেন, যার প্রেক্ষিতে আমাদের বাধ্য হয়ে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হয়েছে।তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান হলো জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার চূড়ান্ত প্রকাশ। এবি পার্টির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে—সব পক্ষের মতামত সন্নিবেশিত করে জুলাই সনদকে ‘সংবিধান আদেশ’ হিসেবে জারি করা, ১০৬ অনুচ্ছেদের আওতায় সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ এবং সর্বোপরি জনগণের সমর্থন যাচাইয়ের জন্য গণভোট আয়োজনের মাধ্যমে এর একটি সফল সমাধানে পৌঁছানো যেতে পারে।কমিশনে বক্তব্য দিতে গিয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার যুক্তিতে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পরবর্তী সংসদের ওপর ন্যস্ত করার প্রস্তাবটি অন্যায্য এবং জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। কারণ, বর্তমান সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে সরকার উৎখাতের কোনো ধারণা নেই। অথচ, জুলাই অভ্যুত্থানকে জাতি এক গৌরবজনক অর্জন হিসেবে দেখছে। এটি কোনো সাংবিধানিক বিধান মেনে সংঘটিত হয়নি। ফলে সংবিধানের ধারাবাহিকতার যুক্তি দুর্বল, অগ্রহণযোগ্য এবং এটি কাঠামোগত পরিবর্তন বিলম্বিত করবে, যা মোটেই কাম্য নয়।ব্যারিস্টার সানী আরও বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের প্রশ্নটি যতটা আইনি, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক। সেজন্য রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা ও কাঠামোগত পুনর্সজ্জায় রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।
২৯ পড়েছেন