• ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেটে ‘মৃত’ স্বামী থানায় হাজির, স্ত্রী লাপাত্তা

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ১২, ২০২৪
সিলেটে ‘মৃত’ স্বামী থানায় হাজির, স্ত্রী লাপাত্তা

Sharing is caring!

সিলেট এইজ : ছাত্র-আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে থানায় মামলা করেছিলেন চতুর স্ত্রী। উদ্দেশ্য ছিলো, এ মামলার মাধ্যমে বাণিজ্য করা। কিন্তু সব ফাঁস করে দিয়েছেন স্বামী। নিজেই হাজির হয়েছেন থানায়, বলেছেন আমি জীবিত। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায়।পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে আল-আমিন নামের এক যুবক হঠাৎ হাজির হন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায়। জানান- তিনি মারা যাননি। তার স্ত্রী মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য তাকে আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে ঢাকার আশুলিয়া থানায় মামলা করেছেন। ৫ আগস্টের আগে তারা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হয়। এরপর তিনি স্ত্রীকে ছেড়ে সিলেট চলে আসেন। এখানেই ছিলেন এতদিন। সম্প্রতি মামলার বিষয়টি জানতে পারেন। আল-আমিন বলেন, ‘ভাই, আমি মরিনাই, কেউ যদি আমার অজান্তে কাগজে কলমে মাইরা ফালায়, তাহলে আমার কী বা করার আছে? আমারে যে মরা দেখাইয়া মামলা করছে আমার বৌ, তা আমি জানতাম না, যখন শুনলাম তখন ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি এবং শেষ পর্যন্ত জীবনের নিরাপত্তায় পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি’। জানা যায়, শেখ হাসিনার পতনের দিন (৫ আগস্ট) ছাত্র-জনতার আন্দোলনকালে আশুলিয়া থানা এলাকায় যারা মারা যান তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় ছিল অজানা। সেই অজ্ঞাত ব্যক্তিকে নিজের স্বামী আল আমিন দাবি করেন কুলসুম নামের এক নারী। ২৪ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলাও করেন কুলসুম। পরে সেটি ৮ নভেম্বর আশুলিয়া থানায় এজাহারভ‚ক্ত হয়। তবে পরবর্তীতে কুলসুমের আচরণে সন্দেহজনক হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কুলসুমের স্বামী সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় অবস্থান করছেন বলে জানা যায়। একপর্যায়ে আল-আমিনের ভাইয়ের খোঁজও পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী একটি বাহিনী। ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়, মৃত দেখানো আল-আমিন বেঁচে আছেন। আল-আমিনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার ভাই বেঁচে আছে। সে তিন দিন আগে আমাকে বলেছে মামলার বিষয়টি। সর্বশেষ সে দক্ষিণ সুরমা থানায় হাজির হয়ে পুলিশের কাছে সব খুলে বলে।’ ছেলের সঙ্গে দক্ষিণ সুরমা থানায় হাজির হন আল-আমিনের বাবাও। জীবিত ছেলেকে মৃত দেখিয়ে মামলার ঘটনায় হতবাক নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের পুরো পরিবার এখন আতঙ্ক গ্রস্ত। আল-আমিন বলেন, মোবাইল ফোনে কথার সূত্র ধরে পরিবারের সম্মতি ছাড়াই ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম কুলসুমকে। ঘরে একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে পারিবারিক কলহ বেড়ে যাওয়ায় সময়টা ভালো যাচ্ছিল না। দেশের গÐগোলের পুরোটা সময় আমি ও আমার স্ত্রী মৌলভীবাজারের জুড়ীতে অবস্থান করেছি। সেসময় আশুলিয়ায় একবারের জন্যও যাইনি। অথচ আমাকে মৃত দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছে আমার স্ত্রী। দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হোসেন বলেন, সোমবার রাত ৯টার দিকে আল-আমিন নামের যুবক থানায় হাজির হয়ে এসব তথ্য জানান। পরে আমরা আশুলিয়া থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করি। রাতেই তাদের একটি টিম সিলেটের উদ্দেশে রওয়ানা দেয় এবং (মঙ্গলবার) সকালে আল-আমিনকে নিয়ে ঢাকায় ফিরে। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি আবুল হোসেন বলেন, কুলসুমের বিরুদ্ধে স্বামী কোনো অভিযোগ বা মামলা দায়ের করবেন কি না জানি না, তবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলার করার কারণে ওই নারীর বিরুদ্ধে এমনিতেই পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে কুলসুম নামের ওই নারী এখন লাপাত্তা রয়েছেন বলে জানা গেছে।

১০৩ পড়েছেন