• ২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

কালিঘাটে জামাল-সোবহানীঘাটে শিপু, দক্ষিন সুরমায় হারুন-বাবুলের জুয়ার আসর বন্ধ করবে কে?

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
কালিঘাটে জামাল-সোবহানীঘাটে শিপু, দক্ষিন সুরমায় হারুন-বাবুলের জুয়ার আসর বন্ধ করবে কে?

Sharing is caring!

আব্দুল হালিম সাগর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন : এসএমপি পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ, উত্তরের ডিসি আজবাহার আলী শেখ, দক্ষিণের ডিসি সোহেল রেজা। সাংবাদিকদের কাছ থেকে এসএমপি এলাকার পতিতালয় ও জুয়ার বোর্ডের খবর পান। অধিনস্থ ওসিদের অভিযান বা বন্ধের জন্য নির্দেশনাও দেন। ওসি বিষয় গুলো তাদের অধিনস্থ বা থানা এলাকার পুলিশ ফাঁড়িকে অবগত করে অভিযানের নির্দেশদেন। আইসি পর্যন্ত ওসির নির্দেশনার ক্ষমতা পর অভিযানে নামের আগেই অপরাধীধের কাছে খবর বলে দেয় আইসিদের নিজস্ব পাশে থাকা মানুষগুলো। তখন এসব অপরাধী আর অপরাধ স্পটের রক্ষাকর্তা হয়ে যায় তারা। তাই এসএমপি এলাকার নানামুখি অপরাধ ধমনে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। কয়েক দিনের দীর্ঘ অনুসন্ধানে এসএমপি এলাকার নানা রকম অপরাধমূলক কর্মকান্ডের স্পট ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু দক্ষিণ জোনে নয়, এসএমপির উত্তর জোনের কালীঘাটে কিছুতেই থামছে না ইন্টারনেট ভিত্তিক ভারতীয় শিলং তীর, তিনতাস, ঝান্ডুমন্ডু নাক জুয়া খেলা। ডিসিরা নির্দেশ দিলেও থানা বা ফাঁড়ি পুলিশ,ডিবি এসব স্পটে কখনো অভিযান চালায় না। কারণ তাদের সাথে জুয়াড়ীদের রয়েছে মাসিক-সাপ্তাহিক চুক্তি। পাশাপাশি এসএমপি ডিবি ও র‌্যাব-৯ এর কতিত সদস্যরারা নাকি এসব আসর থেকে নিয়মিত মাসিক-সাপ্তাহিক বখরা নিয়ে থাকেন। এ তালিকায় রয়েছে কিছু কতিত সাংবাদিক ও। সূত্রমতে দিনে রাতে মোট ৪ বার তীর খেলার টোকন বিক্রি হয়। একই স্পটে রাত হলেই তীরের পাশাপাশি বসে, তিনতাস,কাটাকাটি, ঝান্ডু-মান্ডু নামের জুয়ার আসর। তবে প্রশাসনের সাথে এসব জুয়াড়ীদের সখ্যতা দেখে স্থানীয়রা বাকরুদ্ধ প্রতিবাদ করার সাহস হারিয়ে ফেলছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, নগরীর কালিঘাটের বস্তাপট্টি নামক মার্কেটের দ্বিতীয় তলার ছাদে প্রতিদিন বসে উত্তর সুরমার সব চেয়ে বড় জুয়ার আসর। সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে ছাদের এক পাশে রাখা পলিথিন ও পাটের বস্তার বান্ডিল। আরেক পাশে দুটি চেয়ারে বসেন বড় জামাল ও ছোট জামাল। টেবিলে আছে কাগজের কিছু টুকরো। জুয়া খেলতে সারি বেঁধে আসছেন নানা পেশার শ্রমজীবি মানুষজন। প্রথমে দেখে মনে হবে কোনো যানবাহনের অথবা চিকিৎসকের টিকিট বিক্রির কাউন্টার। কিন্তু আসলে এই টোকেন হচ্ছে শিলং তীর নামে জুয়া খেলার। দিনে এক রকম চিত্র হলেও একই জায়গার চিত্র পালটে যায় সন্ধ্যার পর। সেখানে বসে ঝান্ডু-মান্ডু, তিনতাস,কাটাকাটি নামের জুয়ার আসর। মার্কেটের ছাদে বস্তা রাখা হয় বলে মার্কেটটি সবার কাছে ‘বস্তা মার্কেট’ নামে পরিচিত। হলেও এখন তীর মার্কেট হিসাবে সবার কাছে পরিচিত। মূলত এই আসরটি পরিচালিত হয় জাতীয়তাবাদী যুবদলের ব্যানারে। শরিফ নামের জনৈক ব্যক্তি নাকি এই জুয়ার বোর্ডে শেল্টারদাতা। যদিও সেখানে গিয়ে শরিফকে পাওয়া যায়নি। তবে শরিফের নামে পাওয়া গেছে বিস্তর অভিযোগ। তাকে নিয়ে চলছে অনুসন্ধান।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কালীঘাটের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বোর্ডের মালিক শরিফ হলে মুলতো এই জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করেন বড় জামাল ও ছোট জামাল নামেই দুই ব্যক্তি। দিনে তীর শিলং ও রাতে ঝান্ডু-মান্ডু জুয়ার আসর বসে সেখানে। জামালদের সহযোগী হিসাবে কাজ করে মাছুম, ছেন্টু ও মঞ্জু। তবে জামালই প্রশাসন ম্যানেজ করে মাসিক-সাপ্তাহিক বখরা দিয়ে। যদিও সিসিকের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কিছু দিন আগে এদের উচ্ছেদ করতে অভিযানে নামেন। এরপর পর থেকে জুয়াড়ীরা আরো ব্যাপরোয়া হয়ে উঠে।
কালিঘাট গিয়ে জানা যায়া, কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা জামাল, নাসিম, শিপু কুমিল্লার নজরুলকে। এরা এক সময়ে ভবে ঘুরে বা দোকানের কর্মচারী হলে এখন কোটি টাকার মালিক একেকজন। এছাড়া নগরীর কাষ্টঘর সবজি মার্কেট ও সোবহানীঘাট ফাঁড়ির পাশেই রয়েছে শিপুর দুটি জুয়ার বোর্ড এ দুটি স্পটের প্রশাসনিক দেখাশোনা করেন সেলিম নামের একজন। কিন্তু সুবহানীঘাট পুলিশ ফাড়ির ৫০ গজের ভিতরে শিপুর বিশাল দুটি জুয়ার বোর্ড যে গুলো এক সময় নিয়ন্ত্রণ করতো মৌলভীবাজারের রানা। তবে এ দুটি জুয়ার আসরের খবর জানেন না ফাঁড়ির আইসি।
তবে এসব জুয়ার আসর থেকে প্রতি সপ্তাহে পুলিশ ফাঁড়িগুলো এবং ডিবির নামে কত টাকা সাপ্তাহিক মাসিক বখরা তোলায় হয়, সে তালিকা প্রকাশের অপেক্ষায়। কারণ ইতিমধ্যে এসএমপি এলাকার উত্তর-দক্ষিণ জোনের ৫৭টি জুয়ার বোর্ডের তালিকা, মালিক, নিয়ন্ত্রণ, বখরার হিসাবে রয়েছে এ প্রতিবেদকের কাছে। যা ক্রমেই প্রকাশ করা হবে, এবং লিখিত ভাবে এসএমপি কমিশনারের কাছে অভিযোগ করা হবে।

এদিকে এসএমপির এক শীর্ষ কতর্মকর্তা জানান, গত কয়েক মাসে সিলেট এসএমপি এলাকায় অন্তত শতাধিক জুয়ার বোর্ডে অভিযান চালিয়েছে মহানগর পুলিশ। কোথায় ও জুয়ার খবর পেলে অভিযান চালায় পুলিশ। সর্বশেষ দক্ষিণ সুরমার পুরাতনব্রীজের নিচের কুখ্যাত জুয়াড়ী হারুনের জুয়ার আস্তায় হানা দিয়ে চারজনকে আটক করে পুলিশ। সে সময় পুলিশ দাবী করেছিলো কদমতলী ফেরিঘাটের কুখ্যাত জুয়াড়ী হারুনের চায়না কলোনী, হেলাল মিয়ার কলোনী ও মেম্বার কলোনীতে পুলিশ অভিযান দিয়ে স্পটগুলো ভেঙে দিয়েছে। অপর দিকে কদমতলী পুলিশ ফাঁড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দুরেই বালুর মাঠের বাবুল উরফে ভেঙ্গি বাবুলের বিশাল জুয়ার বোর্ড রয়েছে।
তবে স্থানীয়রা জানান,হারুনের সেই জুয়ার আসরটিতে অভিযানের ২০ মিনিট পরই নতুন করে শুরু করে জুয়াড়ী হারুন জুয়ার বোর্ড। এক সময় জগলুর নেতৃত্বে লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের বিপরীতে চলতো জুয়ার আসর কিন্তু অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারণে জগলুর আস্তানা বন্ধ হয়ে পড়ায় খেয়াঘাটের হারুনের সাথে মিশে গড়ে তুলে শক্তিশালী জুয়ার সিন্ডিকেট। কারণ এই হারুণের পিছনে রয়েছেন ডিবি পুলিশের এক বড়কর্তা ও কয়েকজন সাংঘাতিক, যারা হারুনকে জুয়ার শেল্টার দিয়ে থাকেন।

৬৯৫ পড়েছেন