• ১০ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৫ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে

admin
প্রকাশিত জুলাই ৯, ২০২৫
বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে

Sharing is caring!

বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে জেলা শহরের সড়ক থেকে গলি, বাড়ি থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। হাঁটুপানি জমেছে শহরের অধিকাংশ এলাকা। এতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন।পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে সবজি ক্ষেত ও আমন বীজতলা।
বাগেরহাট শহরের চাল ব্যবসায়ী ঋষিকেশ পাল বলেন, বৃষ্টিতে তার দোকানে গত দুদিন ধরে পানি উঠে গেছে। এতে তার দোকানে অনেক চাল নষ্ট হয়ে গেছে।  বাকি চাল রক্ষার জন্য তিনি আপ্রাণ যুদ্ধ করে যাচ্ছেন।শহরের খারদ্বর এলাকার গৃহবধূ জুলিয়া বেগম জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে  রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে।  এতে শিশু বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না। তিনিও  নিরুপায় হয়ে বাজারে এসেছেন। রিকশাচালক কবির হোসেন বলেন, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ১‘শ টাকাও ইনকাম হয়নি। পানিতে রিকশা চালানো যাচ্ছে না। যাত্রীও কম।শহরের বাসিন্দা গৃহবধূ সপ্না আক্তার বলেন, বাড়ির ভেতরে পানি উঠে গেছে। চুলায় আগুন ধরানো যাচ্ছে না। ছোট ছেলেটা পানিতে সর্দি-জ্বরে ভুগছে।শহরের খানজাহান আলী রোড, রেল রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল মোড়, জেলা ডাকঘরের সামনে, বাসাবাটি, মিঠাপুকুরপাড় মোড়, পৌরসভার পাশের এলাকা, জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পিছনসহ অনেক জায়গায় হাঁটুপানি জমে আছে।এছাড়া, অনেক দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। রাস্তা-ঘাটে পানি জমে থাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। শুধু বাগেরহাট জেলা সদর নয়। নয়টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে জানা গেছে। বিশেষ করে উপকূলে উপজেলা মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল মংলার  হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে ছোট ছোট মাছের ঘের ও পুকুর।বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ আলহাজ্ব মোতাহার হোসেন জানান,  টানা বর্ষণে বাগেরহাটের ১ হাজার ৮ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত রয়েছে। এরমধ্যে ২২২ সেক্টর আমন বীজতলা, ১৭০ হেক্টর সবজি, চার হেক্টর পান ও সাত হেক্টর মরিচ ক্ষেত রয়েছে। এই মুহূর্তে বৃষ্টির পানি নেমে গেলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে না বলে জানান কৃষি বিভাগের জেলারের শীর্ষ কর্মকর্তা।সংবাদকর্মী মামুন আহমেদ ও আহমেদ তারিক জানান,  বাগেরহাট পৌরসভার পাশে তাদের অফিসে হাঁটু পানি হয়েছে।  অফিসের মালামাল অন্যত্র ছড়িয়ে কোন রকমে রক্ষা করেছেন।  এছাড়া রাস্তাঘাট জলমগ্ন রয়েছে।  বাসা থেকে বের  হওয়াই যাচ্ছে না।ব্যবসায়ী বশির শেখ জানান, দোকানে পানি উঠে গেছে। কষ্ট করে মালামাল সরিয়ে রেখেছি। বিক্রি নেই, লোকসান গুনছি। তবে বগেরহাট পৌরসভার একাধিক বাসিন্দা জানান সরকারি খাল প্রভাবশালী দখল করে নিয়ে যাওয়াই ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পানি নামতে পারছে না। তারা অবিলম্বে সরকারি খাল দখলমুক্ত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।এ বিষয়ে বাগেরহাট পৌরসভার প্রশাসক ডা. ফখরুল হাসান বলেন, পৌর শহরে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে, দৃশ্যমান হলে জনভোগান্তি কমবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পনা হাতে নেয়া হচ্ছে।

পড়েছেন