Sharing is caring!
স্টাফ রির্পোটার: সিলেট নগরীর যানজট সমস্যা নিরসন ও অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ঘোষিত আল্টিমেটামের সময় অনুযায়ী সোমবার সকাল থেকে অ্যাকশনে নামে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। অবৈধ যানবাহন ও অনিবন্ধিত গাড়ি চলাচল বন্ধ এবং ব্যাটারি চালিত রিকশার বিরুদ্ধে চলে এই অভিযান। তবে পুনর্বাসন কাজে বর্ধিত সময়ের কারণে আপাতত সময় পাচ্ছেন ভাসমান হকাররা। এসএমপি সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে অভিযানে নামে এসএমপির ট্রাফিক, ক্রাইমসহ বিভিন্ন ইউনিট। সমন্বিত এই অভিযানের আগেই সতর্কতাজারী করে সময় দেওয়া হয়ে ছিলো। এই অভিযানে রয়েছে সিলেট মহানগর পুলিশের আটটি নির্দেশনা। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে যানজটমুক্ত নগরী গড়ে তুলতে সিলেট মহানগরীতে কোনো ব্যাটারি চালিত রিকশা রেজিস্ট্রেশন বিহীন বা ভূয়া নম্বর প্লেটযুক্ত যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। অনুমোদিত স্ট্যান্ডে নির্ধারিত সংখ্যার বেশি সিএনজি চালিত অটোরিকশা রাখা যাবে না। অনুমোদনবিহীন ও অননুমোদিত স্থানে কোনো ধরনের পার্কিং করা যাবে না। মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী উভয়কেই বাধ্যতামূলক ভাবে হেলমেট পরিধান করতে হবে। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নগরীতে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি প্রবেশ করতে পারবে না। বাস, মিনিবাস, কোচ, কার, মাইক্রোবাস ও হাইয়েসের চালকরা ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির কাগজপত্র ও সিটবেল্ট ছাড়া গাড়ি চালাতে পারবেন না। কোনো পরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রী বা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না। এছাড়া হেডলাইট, ব্রেক লাইট ও সিগন্যাল লাইট সঠিক ভাবে সচল না থাকলে গাড়ি রাস্তায় নামানো যাবে না। সিলেট শহরের ভেতরে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করানো বা রাস্তার মাঝে গাড়ি পার্কিং করা যাবে না।
এ নির্দেশনার আলোকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা চলবে এবং অভিযান অব্যাহত থাকবে। এসএমপি কমিশনার জানান, নগরীর সম্মানিত নাগরিকদের ভোগান্তি কমানো এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। কোনোভাবেই নগরীতে অনুমোদনবিহীন, কাগজপত্র ছাড়া বা নিয়ম অমান্যকারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। নগরীতে বেপরোয়াভাবে চলাচলকারী অটোরিকশার লাগাম টেনে ধরতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাবিরোধী অভিযান শুরু করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি পয়েন্ট যথাক্রমে মেন্দিবাগ, নাইওরপুল, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, রিকাবীবাজার, পাঠানটুলা পয়েন্টে একযোগে অভিযান চলে। সকাল ৯টায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী প্রথমে রিকাবীবাজার পয়েন্টে অভিযানের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি পয়েন্টে উপস্থিত থেকে অভিযান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। সিলেট নগরীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। মূল সড়কে অটোরিকশা চলাচলে নাগরিক বিড়ম্বনার পাশাপাশি বিপদে পড়ছে অন্য যানবাহনগুলো। সেই সঙ্গে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র ব্যতীত গণপরিবহন চালাতে বা চালাবার অনুমতি দিতে পারবেন না। কিন্তু সিলেটে অটোরিকশা চলাচল কোনও নীতিমালার মধ্যে পড়ছে না। সিলেট নগরীর বাসিন্দারা বলছেন, পঙ্খিরাজের মতো তাদের গতিবিধি দেখলে উল্টো মনে ভয় জাগে, আতঙ্কিত থাকতে হয় গন্তব্যে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত যাত্রীদের। স্থানীয় সড়কগুলোর পাশাপাশি মূল সড়কেও দাপট অটোরিকশা চালকদের। সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে তারা কোনও নিয়ম মানে না। হুট করে উঠে আসছে মূল সড়কে। চলে উল্টোপথেও। অনেক চালক বেপরোয়া গতিতে চালান। ফলে প্রতিদিন নগরীর ভেতর ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট দফতরের কোনও প্রশিক্ষণ না থাকায় অটোরিকশা চালকদের আচরণও মারমুখী। অনেক ক্ষেত্রে তারা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছেন অতিরিক্ত ভাড়া। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার ঈদেই ৩২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে ব্যাটারিচালিত রিকশায়। এমন পরিস্থিতিতে ২০১৪, ২০১৭ ও ২০২১ সালে ৩ দফা হাইকোর্ট ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ ও আমদানি নিষিদ্ধ করলেও এসবের সংখ্যা না কমে বরং বাড়তে থাকে। সবশেষ গত বছর নভেম্বরে হাইকোর্ট আবারও তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন। এসএমপি কমিশনার জানান, নগরীর সম্মানিত নাগরিকদের ভোগান্তি কমানো এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। কোনোভাবেই নগরীতে অনুমোদনবিহীন, কাগজপত্র ছাড়া বা নিয়ম অমান্যকারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার থেকে নগরীতে চলাচল করা অবৈধ সিএনজি, ব্যাটারি চালিত যানবাহন ও চোরাই গাড়ি ডাম্পিংয়ে নেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে এক নাম্বারে চলা একাধিক সিএনজি অটোরিকশাগুলোও ডাম্পিং করা হচ্ছে। এই অভিযান অব্যহত থাকবে বলে তিনি জানান।
৮৭ পড়েছেন