• ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৪শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ে সিলেটে তারেক রহমানের ‘গোয়েন্দা’ টিম

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ে সিলেটে তারেক রহমানের ‘গোয়েন্দা’ টিম

Sharing is caring!

স্টাফ রির্পোট: আগামী জাতীয় সংসদৃ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে সারাদেশের মতো সিলেট বিভাগেও বিভিন্ন আসনে ভেতরে ভেতরে সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে বিএনপি। বর্তমান বাস্তবতায় প্রার্থীর যোগ্যতা নিরূপণে কঠোর মানদণ্ড অনুসরণের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের প্রতিটি আসনেই বিভিন্ন একাধিক প্রার্থী নির্বাচন করতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজেরদের নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ-প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি কেন্দ্রের নেতাদের সাথে রাখছেন যোগাযোগ। অনেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে শলাপরার্শ করতে যাচ্ছেন লন্ডনে। সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। তবে দলীয় কেন্দ্রীয় সূত্র জানিয়েছে, গত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা, মাঠ পর্যায়ে জনপ্রিয়তা, নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা এবং অভিযোগ থাকা, না থাকার মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে। বিশেষ করে তরুণ, ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং বাদ পড়তে পারেন অনেক হেভিওয়েট ও বিতর্কিত নেতা। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই করতে মাঠে কাজ করছে বিএনপির চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একাধিক ‘গোয়েন্দা’ টিম। তারা সম্ভাব্য প্রার্থীদের ফাইল তৈরি করছেন। যা তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হবে। পরবর্তী সময়ে এই তথ্য দলের মনোনয়ন বোর্ডের কাছে উপস্থাপন করা হবে। বিষয়টি বিএনপির একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। তারা আরও জানিয়েছেন, প্রার্থী চূড়ান্ত করতে এবার কয়েকটি ধাপে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। দলীয় নেতারা মনে করছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সহজ হবে না। তারেক রহমান কয়েকবার এই বার্তা দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফলাফলও বিএনপিকে কঠিন বার্তা দিয়েছে। ফলে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে দলটি আরও সতর্ক ও কঠোর হবে। বিএনপি সূত্র জানায়, এবার শতাধিক আসনে তরুণ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হতে পারে। একই সঙ্গে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত পরিচিত হেভিওয়েট নেতারা মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। সূত্র জানায়, গত ১৬-১৭ বছর ধরে যারা আন্দোলনে সক্রিয় ও আত্মনিবেদিত ছিলেন, তাদের প্রথম অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। প্রার্থীকে অবশ্যই মাঠ পর্যায়ে জনপ্রিয় এবং সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এমন প্রার্থীকেই দল মনোনয়ন দেবে। তবে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে বাদ দেওয়াই শ্রেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্র জানায়, যারা মনোনয়নপ্রত্যাশী তারা এলাকায় কাজ করছেন, দলও তাদের পর্যবেক্ষণ করছে। দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে, দলের তরফ থেকে এবং পেশাদার টিমের মাধ্যমে মাঠে কার কী অবস্থান, গ্রহণযোগ্যতা কেমন এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার আলোকে যখন নির্বাচনি তফসিল দেওয়া হবে তখন দল আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে। প্রত্যেককে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, সমাজের কাছে এবং এলাকার মানুষের কাছে যিনি গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় তাকেই মূল্যায়ন করা হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ত্যাগ-তিতিক্ষা বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে তার ভূমিকা, মানুষের সঙ্গে তার যোগসূত্র তার ইতিবাচক ভাবমূর্তি সবকিছু বিশ্লেষণ করেই হবে। মূল কথা হচ্ছে, গ্রহণযোগ্য এবং জনপ্রিয় ব্যক্তি মনোনয়ন পাবেন।
এ দিকে সিলেটের বিভিন্ন আসনে চার-পাঁচজন প্রার্থী হতে চান, তাদের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা, এটাকে এক ধরনের স্পোর্টস বলা যায়। সেখানে ১০ জন অংশ নেয় কিন্তু প্রথম হয় একজন। এখানে বিএনপির প্রার্থী অনেকেই হবে। কারণ তারা সবাই আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা পালন করেছে। জেল-জুলুম খেটেছে, কষ্ট করেছে। তাই প্রত্যেকেই মনোনয়ন চাইতে পারে। কিন্তু দেখতে হবে যে কোন প্রার্থীটা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য বেশি। যে জনগণের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। প্রতিটি আসনে যোগ্য প্রার্থী আছেন, কিন্তু ভোট টানার সক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে। ভালো কর্মী হলেও ভোট টানতে না পারলে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। তারেক রহমানের প্রতিনিধিরা সারাদেশে এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। স্থায়ী কমিটির অভিজ্ঞ সদস্যদের বিবেচনা করা হবে, তবে তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত এটা এখন পর্যন্ত বলা কঠিন।

৯৭ পড়েছেন