• ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৩ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেট অগ্রগামী গালর্স স্কুলের শিক্ষক আবু ইউসুফ মো: সহিদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানী অভিযোগ

admin
প্রকাশিত আগস্ট ২০, ২০২৪
সিলেট অগ্রগামী গালর্স স্কুলের শিক্ষক আবু ইউসুফ মো: সহিদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানী অভিযোগ

Sharing is caring!

বিশেষ প্রতিবেদন: এবার সিলেট অগ্রগামী গার্লস স্কুল ও কলেজের শিক্ষক আবু ইউসুফ মো: শহিদের বিরুদ্ধে প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রীদেরকে নানা রকম ভাবে যৌন হয়রানী চরম অভিযোগ উঠেছে। তিনি ঐ স্কুলের ইংরেজী বিভাগের সহকারী শিক্ষক। বাড়ী মৌলভীবাজার জেলায়। অগ্রগামীয়ান নামের একটি ফেইসবুক আইডিতে হয়রানীর স্বীকার ছাত্রীরা তাদের সাথে হওয়া নানা রকম অভিযোগ তুলে ঐ শিক্ষকের অপসারণসহ দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী তুলেছেন। প্রাইভেট পড়ানোর নামে নিজের বাসায় ছাত্রীদের বাধ্য করতেন তার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করার জন্য। নতুবা তিনি ঐ ছাত্রীকে পরিক্ষায় উত্তরপত্রে মার্ক কমিয়ে দিতেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

দীর্ঘ দিন থেকে নানা ভাবে হয়রানীর স্বীকার ছাত্রীরা মুখ খোলতে শুরু করেছেন বিকৃত এই শিক্ষক নামধারী আবু ইউসুফ মো: সহিদের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে ছাত্রীদের যৌন হয়রানী করে আসছেন বলে ভুক্তভোগীরা স্যোসাল মিডিয়াসহ এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন। সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক আবু ইউসুফ মো: সহিদ। কয়েক বছর থেকে শিক্ষকতা করছেন সিলেটের এই বালিকা স্কুল-কলেজে। দীর্ঘদিন থেকে প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানী কওে আসলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। ভোক্তভোগীরা জানিয়েছেন এই শিক্ষকের হাত থেকে রেহাই পায়না ক্লাশ ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রীরাও ।

ছাত্রীরদের হয়রানীর বিষয়ে গত ১৯ আগষ্ট এ রকম একটি স্পষ্ট বিবৃতি এসেছে আমাদের কাছে। যেখানে শিক্ষক আবু ইউসুফের বিরদ্ধে নানা রকম যৌন হয়রানীর অভিযোগ উল্লেখ করে তার অপসারণ সহ কঠিন শাস্তি দাবী করা হয়। সেখানে বর্তমান ও প্রাক্তন অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন এই শিক্ষক নামধারী অমানুষ কর্তৃক সাবেক অনেক ছাত্রী যৌন হয়রানীর স্বীকার হয়েছেন। কিন্তু তার ক্ষমতার প্রভাবের কারণে কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করলেও তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।

আবু ইউসুফ মো: সহিদ ছাত্রীদের বিভিন্ন ব্যাচে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে অনেক মেয়ের সর্বনাশ করছেন। অনেক মেয়েকে করেছে যৌন হয়রানী। এমন অভিযোগ গুলো প্রকাশ্যে আসলে তার স্ত্রী বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ কারীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। অথচ এই শিক্ষককে হার স্ত্রী জনৈক ছাত্রীর সাথে নিজের বাসায় অনৈতিক কাজে হাতে নাতে ধরে তাকে ছেড়ে পিতার বাড়ি চলে গিয়ে ছিলেন। আর এখন সাফাই গাচ্ছেন স্বামীর অপকর্মের বিরুদ্ধে।

এ রকম কয়েকটি অভিযোগ থেকে জানা যায়, এই শিক্ষকের কুকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলায় রাত ২টায় আবু ইউসুফের স্ত্রী আনবার আজাদ নামের একজনকে নানা রকম হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।

খাদিজা আক্তার শিল্পী নামের একজন ভোক্তভোগী অভিযোগ করে, আবু ইউসুফ মো: শহিদের নানা অপকর্ম তুলে ধরেন। আবু ইউসুফ নামের ঐ প্রাইভেট শিক্ষক নানা রকম অযুহাতে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে থাকেন।
সম্প্রতি ফোন চার্জের নাম করে নিজের বেডরুমে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানী করেন ঐ শিক্ষক। বিষয়টি ঐ ছাত্রী ফাঁস করে দিলে শিক্ষকের স্ত্রী রাফিয়া রহমান ঐ মেয়ে শিক্ষার্থীকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন, বিষয়টি প্রকাশ না করার জন্য। সাদিয়া সাবরিন তারান্নুম নামের এক প্রাক্তন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ঐ শিক্ষকের হাত থেকে ক্লাশ ৩/৪ এর ছাত্রীরা রেহাই পায়নি।
রিফাত সুলতানা নামের আরেক ভোক্তভোগী বলেন, অনেক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফারিয়া খান নামের প্রাক্তন এক ছাত্রী বলেন, এখনই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ দরকার।
ফিরাত ইউলিয়াম নামে আরেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, আবু ইউসুফ সহিদ ডে সিফটে ক্লাশ নাইন/টেনের ভুগোল ক্লাস করাতেন। সেই সময় তিনি সহ ক্লাসের বিভিন্ন মেয়েকে হয়রানী করেন ঐ শিক্ষক। সে সময় আর্টসের মেয়ে শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগগ করায় পরিক্ষার উত্তর পত্রের খাতায় সবাইকে মার্ক কমিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

অগ্রগামীয়ান নামের একটি ফেইসবুক আইডিতে হয়রানীর স্বীকার ছাত্রীরা তাদের সাথে হওয়া নানা রকম অভিযোগ তুলে ঐ শিক্ষকের অপসারণসহ দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী তুলেছেন।পাঠকের জন্য হুবুহু তা তুলে ধরা হলো………… খাদিজা আক্তার শিল্পী নামের একজন তার পোষ্টে লিখেন, আমার নাম রাইসা ( ছন্দনাম)। এখন থেকে প্রায় ৬ বছর আগে আমি যখন আমি চতুর্থ শ্রেণিতে তখন শাহিদ স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। উনি তখন জিন্দাবাজারে বাসা নিয়ে থাকতেন। উনার স্ত্রী সম্ভবত উনার সাথে থাকতেন না। আমি ৪ মাসের মতো পড়ি উনার কাছে। আমার তখন ছুটি হত সন্ধ্যায়। আমার বাবা মাগরিবের নামাজ পড়ে আমাকে আনতে যেতেন। যার কারণে আমার কিছু সময় বসে থাকতে হত। উনি ক্লাসের মধ্য আমাকে মাঝে মাঝে উনার কোলে বসাতেন। গালে আদর দিতেন। তখন ছোট ছিলাম। ভাবতাম স্নেহ করেন তাই এমন করতেন। আমার ঐ সময় সেক্সচুয়াল কোন জ্ঞান ছিল নাহ বা বুঝতাম নাহ। আমার বাবা দেরি করতেন বিধায় প্রায় অন্য সবাই চলে যেত। তখন উনি গেট বন্ধ করে দিয়ে আমাকে ড্রয়িং রুমের সোফায় বসতে বলতেন। আমিও বসতাম উনি পাশে এসে বসে আদর করতে চাইতেন। একদিন উনি আমাকে কোলে তুলে নিয়ে উনার সোফায় শোয়ান এবং আমার পাজামা খুলতে বলেন। আমি মানা করলে অমার গলায় ধরে চাপ দেন। আমি ভয়ে ভয়ে উনার কথা মানতে বাধ্য হই। উনি লুঙ্গি পড়ে এসেছিলেন এবং আমার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করতে চাইলে আমি খামচি দিয়ে দৌড় দিয়। তখন হঠাৎ বাবা আসেন এবং দরজা নক করেন। তখন উনি আমার পাজামা পড়িয়ে দেন। এবং বলেন উনি আমার সাথে খেলা করছেন। আমিও উনার কথা বিশ্বাস করে বাবার সাথে চলে যাই। কিন্তু আমার তা ভালো লাগেনি। খারাপ লাগছিল। আমি বাসায় এসে কান্না করি এবং বাহিরে পড়তে পড়তে মানা করি। আম্মু বলেন মাস শেষ করে বেতন দিয়ে আর পড়িস নাহ। আমি উনাদের কাছে ঐ দিনের ঘটনা শেয়ার করি নাই যা আমার জীবনের সব থেকে বড় ভুল ছিল। এরপর কিছু দিন উনি আমার সাথে নরমাল আচরণ করেন। উনি মাঝে মাঝে বেড রুমে চলে যেতেন এবং খাতা দেখার বাহানায় বেড রুমে খাতা নিয়ে গল্প করতে করতে শরীরের হাত বোলাতে চাইতেন। আমার সাথে এর কিছুদিন পর অবার মিষ্টিমুখে কথা বলতে থাকেন। এর কিছু দিন পর আমি বাবার জন্য অপেক্ষা করছিলাম তখন উনি আমাকে গেটে তালা মারতে বলেন। চুরের আনাগোনা নাকি বেড়ে গেছে তাই। আমিও গেট তালা মেরে বাহিরে দাড়াব বললে উনি বলেন আমার যদি সমস্যা হয় বা কিডন্যাপ হই। উনি বাবাকে কি বলবেন? এই অযুহাতে আমাকে ড্রয়িং রুমে বসতে বলেন। আমিও যথারীতি উনার কথা বিশ্বাস করে বসি। হঠাৎ আমাকে উনি ডাক দেন এবং বেডরুমে যেতে বলেন। আমি ভয়ে ভয়ে যাই। উনি তখন আমাকে আগের মতো পূণরায় পাজামা খুলতে বলেন আমি মানা করলে ধমক দিয়ে ফিজিক্যাল করতে চান। এতে আমি উনাকে খামচি দিয়ে দৌড় দেই। উনি আমাকে তখন ধরে আবার শারীরিক নির্যাতন করতে চান। আমি তখন অনেক ছোট এবং উনি প্রাপ্ত বয়ষ্ক। উনি শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করেন এবং চরম দুর্ভাগ্য আমার আমি ঐদিন রেইপড হই। এর কিছুক্ষণ পর আমার বাবা চলে আসলে আমি কান্না করি এবং বলি আর ক্লাস করব নাহ। বাবা মাথায় হাত দিয়ে বলেন মাগরিবের সময় কম থাকে তাই দেরি হয়। ঐদিন আমার খুব জ্বর আসে। তখন মাসের প্রায় শেষ। তখন আমি উনার কাছে পড়া বাদ দিয়ে দেই। আমি যখন এডাল্ট হই তখন বুঝতে পারি আমার জীবনের সব থেকে বড় খারাপ সময় আমি চতুর্থ শ্রেণিতে কাটিয়ে এসেছি। ঐ দিন গুলোর ঘটনা চিন্তা করলে এখনো আমার রুহ কেপে উঠে। এতোদিনের জমিয়ে রাখা কথা গুলো আজকে শেয়ার করলাম। এছাড়াও আরও কিছু ঘটনা রয়েছে যা বর্ণনা করার মতো নয়। আমার অনেক সহপাঠী আছে যাদেরকে উনি ফিজিক্যালি এবিউজ করেছেন। আমাদের পড়া দিয়ে নির্দিষ্ট কাউকে সব থেকে কঠিন প্রশ্ন করতেন। সে না পারলে বেডরুমে নিয়ে পারসোনালি বোঝানোর কথা বলে রুমে নিয়ে যেতেন। আমাকেও অনেক দিন বলেছেন আমি বুঝেছি বলে চলে আসতাম। সবার কাছে অনুরোধ এমন নিকৃষ্ট কাজের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর অনুরোধ করছি। আইনি ব্যবস্থা নিয়ে এই লম্পটের চাকরিচ্যুত করার আহ্বান জানাই। (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক-এসএসসি ২০২৪ ব্যাচ) ঐ ছাত্রী আরো উল্লেখ করেন, সাহিদ স্যারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্যি। এবং উনার স্ত্রী যে নাটক করছেন উনি এসব জানেন না বলে এটাও মিথ্যা। স্যারের নারী কেলেংকারী অনেক আগেই উনার স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ে গেছিলো। একটা ব্যাচে উনি ছেলে মেয়েদের একসাথে পড়াইতেন। আমি যেখানে ছিলাম সেখানে আমার মতই সবাই ৬-৭ এর ছিলো। আমাদের সাথের একটা মোয়ের বড়বোন পড়ত। আমরা তখন এত কিছু বুঝতাম না। ছোট ছিলাম বুঝে আসতো না। প্রায়ই স্যারের বাসায় গেলে দেখা যেত ঐ বড় আপু থাকতেন। অনেক সময় চলে যেতেন অনেক সময় আমাদের পাশেই স্যার পড়াইতেন। একদিন আমরা স্যারের বাসায় গিয়ে দেখি উনার ওয়াইফ বাইরে। স্যার একা বাসায়। উনি বলেন আজ শরীর ভালো না পড়াবো না। আমরা একটু ইতস্তত করছিলাম। কারন এখন স্যার না পড়ালে ১/২ ঘন্টা পর অন্য টিউশনে যাওয়া পসিবল না। পরে স্যার আমাদের নিয়ে উনার বেডরুমে চলে যান। আমরা যাওয়ার আগেই ঐ আপু সেখানে ছিলেন। একটু সময় পর স্যার বলেন তোমরা সামনের রুমে চলে যাও আমি একটু পর আসছি আমরা চলে যাই। কিছুক্ষন পর উনার ওয়াইফ চলে আসেন। তারপর স্যারের রুমে গিয়ে দেখেন দরজা লক। আমরা বাইরে থেকে চেচামেচি শুনি একটু পর উনার ওয়াইফ এসে আমাদের প্রশ্ন শুরু করেন আমরা কখন আসছি? ঐ মেয়ে কখন আসছে? এরকম। মানে ঘরে উনাদের ঝগড়া শুরু হয়ে যায়। দরজা কেন বন্ধ ছিলো এরকম প্রশ্ন বার বার করেন। স্যার আমাদের চলে যেতে বলেন আমরা বের হয়ে যাই। সেদিনের পর ঐ আপু আর আসেও নাই। স্যার ছেলেদের গায়েও হাত দিতেন। তাও নরমালি না। উনি অনেক সময় কোলে বসার কথাও বলছেন। তাছাড়া একদম পাশে বসিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখতেন। স্যারের অস্বাভাবিক আচরন প্রথমে বুঝতে না পারলেও কিছুদিন পর ধরা পরে যায়। আমি স্যারের বাসায় যাইতাম অনেক সময় উনার ওয়াইফের সাথে ঝগড়া শুনতাম। স্যাারের ওয়াইফ এমনও বলেছেন তোমার জন্য কাজের মানুষ রাখা যায় না। একসময় উনি স্যারকে ফেলে চলেও গিয়েছিলেন। পরে শুনেছিলাম উনি ফিরে এসেছেন।উনার যে ছাত্র ছাত্রীদের সাথে খারাপ সম্পর্ক ছিলো তেমন না। উনি অনেক শিক্ষকদেরও অপমানসূচক কথা বলতেন। আজকে কয়েকজন বোনের কথা শুনে মনে হল উনার একথা সবাইকে জানানো দরকার। উনি যে বলতেছেন উনি এমন না আসলেই উনি খুব খারাপ মানুষ। আর উনার ওয়াইফ জেনে শুনে তাকে প্রটেক্ট করতে চাচ্ছেন। আপনাদের অগ্রগামীর কেউ যদি মৌলভীবাজার এর আলী আনজাদের থাকে তাহলে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন। অনেকে ভয়েও কিছু বলবে না। উনার বড় ভাই আর্মিতে ছিলেন। তাছাড়া একজন বড় বিচারপতিও ছিলেন। উনাকে অনেকেই ভয় পায়। আমি উনার খুব কাছের এক স্টুডেন্ট তাই আমার পরিচয়টা গোপন রাখবেন, দয়া করে।

২৭৩ পড়েছেন