Sharing is caring!
সিলেট এইজ নিউজ: সিলেটে জ্বালানী তেলের সংকট আরও প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাহিদার অর্ধেক জ্বালানীও সরবরাহ করতে পারছে না রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন কোম্পানিগুলো। তাই আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে বিপণন কোম্পানি থেকে তেল উত্তোলন বন্ধ ও ২২ জানুয়ারি থেকে তেল বিক্রি বন্ধ করে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রেলের ওয়াগন সংকটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জ্বালানী তেল না আসায় এই সংকট তৈরি হয়েছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতোদিন সিলেটের ব্যবসায়ীরা ভৈরব থেকে জ্বালানী এনে পাম্পগুলো সচল রেখেছিলেন। কিন্তু পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার তারা সংকট নিরসনে আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছেন।সম্প্রতি একটি সভা করে জ্বালানী তেল ব্যবসায়ীরা এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ব্যবসায়ীরা জ্বালানী তেল সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য সিলেটে বন্ধ থাকা রাষ্ট্রীয় শোধনাগারগুলো চালুর দাবি জানিয়েছেন। জ্বালানী তেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সিলেট বিভাগে ১১৪টি পাম্পের মাধ্যমে জ্বালানী তেল বিক্রি করা হয়। বিভাগে প্রতিদিন ১০ লাখ লিটার ডিজেল এবং ৩ লাখ লিটার পেট্রোল ও অকটেনের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ওয়াগন সংকটের কারণে গড়ে প্রতিদিন ডিজেল, অকটেন ও পেট্রোল মিলিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে ৫-৬ লাখ লিটার। সপ্তাহে যেখানে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে তেলবাহী একটি লরি আসার কথা সেখানে আসছে মাত্র ২-৩ দিন। যে কারণে দিন দিন জ্বালানী তেলের সংকট বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন আহমদ জানান, সিলেট বিভাগে জ্বালানী তেলের যে চাহিদা রয়েছে তার অর্ধেকও সরবরাহ নেই। এতোদিন ক্রেতাদের স্বার্থ বিবেচনায় সিলেটের ব্যবসায়ীরা নিজ খরচে ভৈরব থেকে জ্বালানী তেল এনে বিক্রি করছিলেন। কিন্তু পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় পাম্প মালিকদের অব্যাহতভাবে লোকসান গুনতে হচ্ছে। সিলেটের বিপণন কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার ডিপো তেলশুণ্য পড়ে থাকছে দিনকে দিন। এই অবস্থায় ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছেন।এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একসময় সিলেটের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে পাওয়া কনডেনসেড শোধন করে সিলেটেই উৎপাদন হতো জ্বালানী তেল। কিন্তু সিলেটের শোধনাগারগুলোতে উৎপাদিত তেলের মান ভাল নয়, এই অজুহাতে ২০২১ সালে বন্ধ করে দেয়া হয় সকল শোধনাগার। পরে জ্বালানী তেল ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের মুখে কেবলমাত্র রশিদপুরের শোধনাগারটি চালু হলেও বাকিগুলো এখনো বন্ধ রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটের শোধনাগারগুলোতে যে মানের তেল উৎপাদিত হতো, এখন তার চেয়ে নিম্নমানের তেল চট্টগ্রাম থেকে আসছে। রাষ্ট্রীয় শোধনাগারগুলো বন্ধ করে এখন সিলেট থেকে কনডেনসেড চট্টগ্রামে পাঠিয়ে বেসরকারি শোধনাগারে তেল উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমনি সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে সিলেটে জ্বালানী তেলের সংকটও বাড়ছে। এই অবস্থায় সিলেটের জ্বালানী ব্যবসায়ীদের পক্ষে পাম্প চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তারা আন্দোলনে নামছেন।
৫৪৯ পড়েছেন