• ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ছাতকে প্রভাবশালীর চত্রেুর বিরুদ্ধে সরকারি খাল ভরাট করার অভিযোগ

admin
প্রকাশিত মার্চ ১৩, ২০২৪
ছাতকে প্রভাবশালীর চত্রেুর বিরুদ্ধে সরকারি খাল ভরাট করার অভিযোগ

Sharing is caring!

স্টাফ রির্পোটার: সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানায় সরকারি খাল দখল করে ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালীর চত্রেুর বিরুদ্ধে। ওই এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রধান প্রধান খালগুলো দখলের মহোৎসব চলছে।প্রভাবশালীরা বড় বড় ইমারত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে খাল দখল করে চলছে। এতে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ জনগণ। সরকারি শত কোটি টাকার খালে মাটি ভরাটের ঘটনায় এলাকা চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ খাল ভরাটের কাজে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে সেই চক্রটি হত্যার হুমকি দেয় ও পুলিশের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে এলাকা অশান্ত হয়ে উঠেছে। এলাকাবাসীর দুপক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা যায়,উপজেলার গোবিন্দগঞ্জের সৈয়দগাঁও
ও ছৈলাআফজলাবাদ ইউনিয়নের পুর্ব রামপুর মৌজার সুনামগঞ্জ সিলেট সড়ক সংলগ্ন সরকারী ‘নয়ন জুলি খাল’। এ খাল দিয়ে প্রাচীন কাল থেকে পানি নিষ্কাশন হয়ে আসছে। ধীরে-ধীরে খালটি প্রায় মৃত রূপধারণ করছে। এ সুযোগে একটি স্বার্থান্বেষী মহল প্রায় শত কোটি টাকার সরকারি খাল দখলের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছে খাল দখল করার সুযোগ নেই। এ খাল দিয়ে বর্ষাকাল এছাড়াও কয়েক শতাধিক বাসা-বাড়ি বাজারের জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। ওই খাল দখল করে ভরাট করছেন। এভাবে খাল ভরাট করা হলে গোবিন্দগঞ্জ নুতন বাজার এলাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন লোকজন। সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার প্রবেশদ্বার গোবিন্দগঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন সরকারী ১ নং খতিয়ানভুক্ত খাল শ্রেণীভুক্ত প্রায় এক একর ১০ শতক ভুমি( নয়ন জুলি খাল) বলে উল্লেখ্য রয়েছে। ব্রীজ সংলগ্ন এ ভুমিতে প্রস্তাবিত পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের জন্য নির্ধারণ করে পরিদর্শনে আসা জেলা ও বিভাগীয় কর্মকর্তারা ইতি মধ্যেই সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেয়া হয়। গোবিন্দগঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন খাল(নয়ন জুলি খাল) একদিকে সরকারী সম্পত্তি, অন্য দিকে এলাকার পানি নিস্কাশনের একটি প্রধান জলাধার। এ খাল ভরাট হলে এলাকার বৃহত্তর অংশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীণ হবে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী গোবিন্দগঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন খাল শ্রেনীভুক্ত সরকারী ১ একর ১০ শতক ভুমি ইজারা বা বন্দোবস্ত দেয়া সরকারী আইন পরিপন্থি। সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক ও ভটেরখাল নদীর মিলনস্থল গোবিন্দগঞ্জের ব্রীজের গোড়ায় ওই ভুমিতে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের বিষয়টি এখন এলাকাবাসীর দাবী করে আসছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত এবং সিলেট ও সুনামগঞ্জের ৪টি থানার মোহনা ছাতকে গোবিন্দগঞ্জের ওই ভুমিতে প্রস্তাবিত পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন অতিব জরুরী। সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কসহ এর আশপাশ এলাকা নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত পুলিশ ক্যাম্প গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখতে পারবে বলে এলাকাবাসীর বিশ্বাস। ভুমি পরিবেশ আইন ও বিধি রক্ষায় সুপ্রিম কোর্ট মোকদ্দমায় সড়ক সংলগ্ন সরকারী খাল, নদী-নালা, রাস্তা ভরাট, বানিজ্যিক স্থান হিসেবে ইজারা প্রদান নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও জেলা সড়কের উভয় পাশে অন্তত ১০ মিটার এলাকা পর্যন্ত কোন স্থাপনা না থাকার মর্মে উচ্চ আদালতে একাধিক রায় ও রয়েছে। এসব মামলা রায়ের আদেশকে না মেনে গায়ের আইননে এসব করছেন। তারা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ শত কোটি টাকার সরকারি নয়ন জুলি খাল’দখল করার অভিযোগের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। উচ্চ আদালতের ১৫৪৬/২০১১ নং রীট আবেদনেও কার্যকর আদেশ জারি করেন। এছাড়া হাইকোট বিভাগের ২০১৩ সালে রিট মামলা দায়ের করেন যার নম্বার ৩৮৫৫। এ মামলা আদেশ বাস্তবায়ন এবং প্রাকৃতিক আদেশ বলে ২০১৪ সালে ১৬ এপ্রিল ভুমি মন্ত্রনালয় আইন শাখা ১ সিনিয়র সহকারি সচিব আলিয়া মেহের স্বাক্ষরিত প্রঞ্জাপন জারি করেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে। এর প্রেক্ষিতে ২০০০ ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ বাস্তবায়নের জন্য এক আদেশে জেলা ও উপজেলার শহর এবং পৌর এলাকাসহ দেশের সকল খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান ও প্রাকৃতিক জলাধার ও খাল রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলা হয়। ওই ভুমিতে প্রস্তাবিত পুলিশ ক্যাম্প প্রতিষ্ঠার লক্ষে একটি সাইনবোর্ডও সাটানো থাকা সত্তে¡ও গোপনে ইজারার নামে সরকারী ভুমি দখলের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে এ চক্র। সরকারী ভুমি সরকারী কাজে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যবহার করা বিধান থাকলেও ভুমি প্রশাসনের সহযোগিতায় স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি ওই ভুমি বাজার সংস্কারে নামে দখলের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষায় এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালে ২২ সেপ্টেম্বর উপজেলা ভুমি প্রশাসন গোপনে ইজারা প্রদানের জন্য ৯৮৭ নং স্মারকে জেলা প্রশাসন বরাবরে একটি প্রস্তাব পাঠান। এ নিয়ে এলাকায় চরম অসন্তোষ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভুমি মন্ত্রনালয় আইন অনুযায়ী সড়ক সংলগ্ন সরকারী খাল বা পতিত সড়ক ইজারা যোগ্য নয়। এ বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা নিয়ে এখানে প্রস্তাবিত পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন কার্যক্রম বাস্তবায়নের পাশাপাশি কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে সরকারী এ ভুমি ইজারা বা বন্দোবস্ত না দেয়ার দাবী করেন এলাকাবাসী। এব্যপারে নিবাহী কর্মকতা গোলাম মুস্তাফা মুন্না এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,উপজেলা পরিষদ এর কমিটিতে একটি প্রস্তাবে অনুমোদন করা হয়েছে। সরকারি খালে মাটি ভরাট কবে বাজার সংস্কারের করার উদ্দ্যোগ নেন উপজেলা পরিষদ। এব্যাপারে থানার ওসি শাহ আলম জানান,মাটি ভরাট নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অশান্ত পরিবেশ শান্ত করেন তিনি।

৪১ পড়েছেন